কমান্ডারের বাড়িতে হামলাকারীদের পাকিস্তান সেনাপ্রধানের কড়া হুঁশিয়ারি

ইমরান খানকে গ্রেফতারের জেরে পাকিস্তানের সেনা দপ্তর ও কমান্ডারের বাড়িতে হামলাকারীদের কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছেন দেশটির সেনাপ্রধান আসিম মুনির। ওই হামলার ঘটনাকে তিনি ‘কালো দিন’ হিসেবে অভিহিত করেছেন।

শনিবার (১৩ মে) পেশোয়ারে সেনা কর্মকর্তাদের একটি অনুষ্ঠানে এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘যারা এ হামলার পরিকল্পনা করেছেন, অংশ নিয়েছেন, প্ররোচনা ও উসকানি দিয়েছেন, তাদের সবাইকে বিচারের মুখোমুখি করা হবে। ’

পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আরও বলেন, সশস্ত্র বাহিনী তার স্থাপনার পবিত্রতা ও নিরাপত্তা লঙ্ঘন বা ভাঙচুরের আর কোনো প্রচেষ্টা বরদাস্ত করবে না। কালো দিবসের সমস্ত পরিকল্পনাকারী, প্ররোচনাদানকারী, উসকানিদাতা এবং নাশকতাকারীদের বিচারের আওতায় আনার জন্য আমরা সংকল্পবদ্ধ।

উল্লেখ্য, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে গত ৯ মে গ্রেফতারের পর উত্তাল হয়ে ওঠে পাকিস্তান। দলীয় প্রধানকে গ্রেফতারের কারণে এদিন ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন তেহরিক ই-ইনসাফের (পিটিআই) কর্মীরা। রাওয়ালপিন্ডিতে সেনাবাহিনীর সদরদপ্তর এবং লাহোরে এক সেনা কমান্ডারের বাড়িতে হামলা চালায় তারা।

বিক্ষোভ থামাতে ৭২ ঘণ্টার জন্য ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়। গ্রেফতার করা হয় ২ হাজারের বেশি মানুষকে। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত ১০ জন নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

এসব সহিংসতা ও সেনাবাহিনীর সদরদপ্তরে জনতার হামলার জন্য সেনাপ্রধান আসিম মুনিরকেই দুষছেন ইমরান খান।

আদালতে শুনানির বিরতিতে বিবিসির সাংবাদিক ক্যারোলিন ডেভিসকে সাক্ষাৎকারে পিটিআই প্রধান বলেন, গত কয়েকদিন ধরে যা যা হচ্ছে— তাতে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তা ও সেনাসদ্যদের আমি দোষ দেব না… তবে একজনকে অবশ্যই দায়ী করব— আর তিনি হলেন সেনাপ্রধান। পাকিস্তান সামরিক বাহিনীতে এখন গণতন্ত্র বলে কিছু নেই। সম্প্রতি সামরিক বাহিনী যে অপমানের শিকার হলো— তার দায়ও সেনাপ্রধানকে নিতে হবে। ’

ইমরান খানের এমন বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জানান প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ। তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) চেয়ারম্যান ‘নিচু মানসিকতার প্রমাণ’ করেছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

সেনাপ্রধানের ভূয়সী প্রশংসায় শেহবাজ শরিফ বলেন, সেনাপ্রধানের বিরুদ্ধে ক্রিকেটার থেকে রাজনীতিবিদ হয়ে ওঠার ক্ষোভ সবচেয়ে খারাপ। পাকিস্তানের ইন্টার-সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্সের মহাপরিচালক হিসেবে জেনারেল মুনির সব সময় সচেতন ছিলেন। তিনি তার পদমর্যাদায় অত্যন্ত প্রশংসিত। যোগ্যতার ভিত্তিতে তার নিয়োগ হয়েছিল। তার বিরুদ্ধে খান, তার স্ত্রী বুশরা বিবি, ফারাহ গোগি ও পিটিআই’র জ্যেষ্ঠ নেতৃত্ব অভিযোগ তুলেছে, যা অসৎ উদ্দেশ্য ছাড়া কিছুই নয়।

সংবাদ সূত্রঃ জিও নিউজ