অস্ট্রিয়ার ৩২০ বছরের পুরোনো সংবাদপত্র উইনার জাইটুং অনলাইনে প্রকাশ করার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দেশটির পার্লামেন্টে এ সিদ্ধান্ত হয়েছে।
এর মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন পত্রিকাটির ভবিষ্যৎ নিয়ে অস্ট্রিয়া সরকার এবং সংবাদপত্রের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে চলা বিরোধের অবসান হলো।
১৭০৩ সালে প্রকাশিত পত্রিকাটির নামকরণ করা হয় উইনারিসেস ডায়ারিয়ামের নামানুসারে। পরে ১৭৮০ সালে উইনার জাইটুং নামকরণ করা হয়। ১৮৫৭ সালে তৎকালীন সম্রাট ফ্রানজ জোসেফের আমলে পত্রিকাটি রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন হয়। এটিই ছিল অস্ট্রিয়ার প্রথম সরকারি পত্রিকা।
পার্লামেন্টের তৃতীয় প্রেসিডেন্ট নরবার্ট হফার বলেন, ‘সংখ্যাগরিষ্ঠের মতামতের ভিত্তিতে এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘১ জুলাই থেকে পত্রিকাটি প্রাথমিকভাবে অনলাইনে পাওয়া যাবে। এ জন্য নতুন একটি আইন প্রণয়ন করা হয়েছে।’
তহবিল পাওয়া সাপেক্ষে প্রতিবছর ন্যূনতম ১০ কপি পত্রিকা প্রকাশ করা হবে। ওয়ার্ল্ড অ্যাসোসিয়েশন অব নিউজ পাবলিশার্স এএফপিকে জানিয়েছে, দ্য উইনার জাইটুং পত্রিকাকে বিশ্বে মুদ্রিত প্রাচীন সংবাদপত্র হিসেবে ২০০৪ সালে অভিহিত করা হয়।
সরকারের যুক্তি, পত্রিকাটি অনলাইনে সরকারি তথ্যকে কেন্দ্রীভূত করবে। পাশাপাশি উইনার জাইটুং পত্রিকা মিডিয়া কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করবে। এটি সংবাদ সংস্থা ও সাংবাদিকদের জন্য প্রশিক্ষণকেন্দ্রের ব্যবস্থা করবে।
পত্রিকাটি উপব্যবস্থাপনা সম্পাদক মাথিয়াস জিয়েগলার এএফপিকে বলেন, ‘অনেকেই ভয় পাচ্ছেন যে সরকার উইনার জাইটুংয়ের ৩২০ বছরের পুরোনো ইতিহাসকে ব্র্যান্ড হিসেবে রাখতে চায়। যদিও পত্রিকাটির ভবিষ্যতের প্রকাশনা কেমন হবে, তা কেউ জানে না। এমনকি পত্রিকাটিতে আদৌ প্রকৃত সাংবাদিকতা করা সম্ভব হবে কি না, সেটি নিয়েও আশঙ্কা রয়েছে।’
ট্রেড ইউনিয়নের তথ্য অনুযায়ী, পত্রিকাটিতে বর্তমানে ২০০–এর বেশি কর্মী আছেন। তাঁদের অর্ধেককে ছাঁটাই করা হবে। যাঁদের মধ্যে ৪০ জন সাংবাদিক।
ইউরোপীয় কমিশনের (ইইউ) ভাইস প্রেসিডেন্ট ভেরা জুরোভা অস্ট্রিয়ান নিউজ এজেন্সিকে (এপিএ) বলেছেন, পত্রিকাটির বর্তমান পরিস্থিতিতে তিনি খুশি নন। তিনি বলেন, বছরের পর বছর ধরে মানুষকে তথ্য সরবরাহের ক্ষেত্রে উইনার জাইটুং গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
শতাব্দীর প্রাচীন এ পত্রিকার ছাপানো বন্ধে সরকারি সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে গত মঙ্গলবার অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনার রাস্তায় শত শত মানুষ বিক্ষোভ করেছেন।
সংবাদ সূত্রঃ এএফপি