ভারতের উত্তর প্রদেশে পুলিশ হেফাজতে আতিক-আশরাফকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা

ভারতে রাজ্যসভার সাবেক এক সদস্য এবং তার ভাইকে পুলিশ হেফাজতে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। তিনি অপহরণের একটি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত ছিলেন।

হত্যা ও হামলার একটি মামলায় বৃহস্পতিবার (১৩ এপ্রিল) গ্রেপ্তারের পর আতিক আহমেদ নামে সাবেক ওই বিধায়ককে শনিবার রাতে শারীরিক পরীক্ষার জন্য নিয়ে যাচ্ছিল পুলিশ।

রাত সাড়ে ১০টার দিকে মেডিকেল কলেজের কাছে দাঁড়িয়ে তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছিলেন। এ সময় তখন খুব কাছ থেকে পিস্তল বের করে তার মাথায় গুলি করা হয়। সেই সময় পাশে দাঁড়ানো তার ভাই আশরাফকেও গুলি করে হত্যা করা হয়। যারা গুলি করেছিলেন, তারা সাংবাদিক সেজে দাঁড়িয়ে ছিলেন।

স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, গুলি করার পরপরই তিন ব্যক্তি পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেন। তাদের পুলিশের হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, আতিক আহমেদ ও তার ভাই আশরাফ পুলিশি হেফাজতে থেকেই সাংবাদিকদের সাথে কথা বলছিলেন। সেই সময় তাদের শারীরিক পরীক্ষা করানোর জন্য কাছাকাছি একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। সে সময় তাদের দুজনকেই গুলি করে হত্যা করা হয়।

কিছুদিন আগে থেকেই আতিক আহমেদ দাবি করে আসছিলেন যে, পুলিশের কারণে তার জীবন হুমকিতে রয়েছে। কয়েকদিন আগে আতিক আহমেদের অপ্রাপ্তবয়স্ক ছেলে আসাদও পুলিশের গুলিতে নিহত হয়।

একটি হত্যা মামলায় আসাদ ও আরেকজন ব্যক্তি পলাতক ছিলেন। এই সপ্তাহের শুরুর দিকে পুলিশের গুলিতে দুজন নিহত হয়, যাকে ‘বন্দুকযুদ্ধ’ বলে পুলিশ বর্ণনা করেছে।

লাইভ ভিডিওতে দেখা গেছে, সাংবাদিকদের সাথে কথা বলার সময় তার কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, ছেলের শেষকৃত্যানুষ্ঠানে তিনি গিয়েছিলেন কিনা?

ক্যামেরার সামনে তার সর্বশেষ বক্তব্য ছিল, ‘তারা আমাদের নিয়ে যায়নি, সুতরাং আমরা যেতে পারিনি। ‘ ঠিক সেই সময় সাংবাদিক সেজে দাঁড়িয়ে থাকা ব্যক্তিরা তার মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে গুলি করে। এরপর পাশে দাঁড়ানো তার ভাইকেও হত্যা করা হয়। গুলিতে একজন পুলিশ সদস্য এবং একজন সাংবাদিকও আহত হয়েছে।

উত্তর প্রদেশের প্রয়াগরাজের সাবেক বিধায়ক (রাজ্যসভার সদস্য) আতিক আহমেদ এবং তার ভাইকে হত্যা এবং হামলার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। অপহরণের একটি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হওয়ার পর ২০১৯ সাল থেকে তিনি কারাগারে ছিলেন।

উত্তর প্রদেশের ক্ষমতায় রয়েছে ভারতের হিন্দু জাতীয়তাবাদী দল বিজেপি। বিরোধী দলগুলো সরকারের সমালোচনা করে বলছে, নিরাপত্তা ব্যবস্থার গাফিলতিতে এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে।