সুদানে পাল্টা অভ্যুত্থানের সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে ক্ষমতাসীন সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে। সেনাবাহিনীকে হটিয়ে প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ, সেনাপ্রধানের বাসভবন ও কয়েকটি বিমানবন্দরের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে সুদানের বৃহত্তম আধাসামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ)। রাজধানী খার্তুমে দুপক্ষের মধ্যে প্রচণ্ড যুদ্ধ চলছে। দেশের অন্যান্য অঞ্চলের সঙ্গে খার্তুমের যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।
ভোররাতে আরএসএফ সদস্যরা খার্তুম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ, সেনাপ্রধান ও সামরিক শাসক আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহানের বাসভবন দখল করে নেয়। সকাল থেকে খার্তুমে সেনাবাহিনী ও আরএসএফ সদস্যদের মধ্যে প্রচণ্ড সংঘর্ষ চলছে। রাজধানীর বাইরে আরও কয়েকটি শহরের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে।
সুদানের প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের সামনে ও বিমানবন্দরের বাইরে আরএসএফের সৈন্যরা ট্যাঙ্ক, সাঁজোয়াযান নিয়ে টহল দিচ্ছে। স্থানীয় সূত্রগুলো থেকে পাওয়া ফুটেজে বিমানবন্দরের রানওয়েতে আরএসএফ সদস্যদের বড় ধরণের উপস্থিতি দেখা গেছে। নগরীর সাহাফা, আল-হারি, খার্তুম-২ ও অন্য কয়েকটি এলাকায় দুই পক্ষ ট্যাঙ্ক যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছে বলে জানা গেছে।
খার্তুমে সেনাবাহিনীর সদর দপ্তর ও আরএসএফের প্রধান ঘাঁটির সামনে ট্যাঙ্ক, সাঁজোয়াযান ও ভারি সামরিক সরঞ্জাম মোতায়েন রয়েছে। দুটি জায়গা থেকেই ভারি গোলাবর্ষণের আওয়াজ পাওয়ার কথা জানিয়েছেন রয়টার্সের এক সাংবাদিক। নগরীর বেশকিছু এলাকা থেকে ধোঁয়ার কুণ্ডলী উঠতে দেখা যাচ্ছে।
খার্তুমের আকাশে সুদানের বিমান বাহিনীর যুদ্ধবিমান ও হেলিকপ্টার বহর উড়তে শুরু করেছে। সামরিক বাহিনী বলেছে, তারা শীঘ্রই গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোগুলোতে নিয়ন্ত্রণ পুনঃপ্রতিষ্ঠা করবে এবং আরএসএফের ‘দায়িত্বহীন’ পদক্ষেপের জবাব দেবে।
পূর্ব আফ্রিকার আন্তঃসরকারি উন্নয়ন সংস্থা আইজিএডি খার্তুমসহ কয়েকটি জায়গায় সুদানের সামরিক বাহিনী ও আরএসএফের মধ্যে যুদ্ধের খবরে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। সংস্থাটি সুদানের পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে বলে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে।
আরএসএফ এক বিবৃতিতে বলেছে, সামরিক বাহিনীর সদস্যরা প্রথমে আক্রমণ চালিয়েছে। জবাবে আরএসএফ সদস্যরা রাজধানী খার্তুম, উত্তরাঞ্চলীয় শহর মেরোয়ি ও পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর আল-ওবেইদের বিমানবন্দর নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে।
এক লাখের বেশি সদস্য রয়েছে আরএসএফের। সুদানের বৃহত্তম এ আধাসামরিক বাহিনীর নেতৃত্বে রয়েছেন সাবেক মিলিশিয়া কমান্ডার জেনারেল মোহাম্মদ হামদান দাগলো। আরএসএফের উত্থানের পেছনে সাবেক প্রেসিডেন্ট ওমর আল বশিরের সমর্থকদের হাত রয়েছে বলে মনে করেন অনেকে।