ইরানে রেলপথে প্রথমবারের মতো জ্বালানি রপ্তানি করছে রাশিয়া

ইউক্রেন অভিযানের পর পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার মুখে তেল ও গ্যাসের জন্য নতুন বাজার খুঁজতে থাকা রাশিয়া রেলপথে ইরানে প্রথমবারের মতো জ্বালানি সরবরাহ করছে।

দুইটি সূত্রের বরাতে রয়টার্স জানায়, ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসে ইরানকে ৩০ হাজার টন পেট্রোল ও ডিজেল সরবরাহ করেছে।

তৃতীয় আরেকটি সূত্রও এই সরবরাহের বিষয়টি নিশ্চিত করলেও পরিমাণ সম্পর্কে নিশ্চিত করতে পারেনি। তবে এই জ্বালানি রাশিয়া থেকে কাজাখস্তান ও তুর্কমেনিস্তান হয়ে রেলপথে সরবরাহ করা হয় বলে জানায় সূত্রটি।

একটি সূত্র জানায়, ইরান থেকে কিছু পেট্রোল কার্গো ট্রাকে করে ইরাকসহ প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোতে পাঠানো হয়েছিল।

মধ্য এশিয়ার একজন তেল ব্যবসায়ী বলেছেন, ইরান একটি তেল উৎপাদনকারী দেশ এবং নিজস্ব শোধনাগার রয়েছে। কিন্তু সম্প্রতি দেশটিতে জ্বালানির অভ্যন্তরীণ চাহিদা উৎপাদনকে ছাড়িয়ে গেছে।

বিষয়টি সম্পর্কে জ্ঞাত দুই ব্যবসায়ী বলেন, ২০১৮ সালে কাস্পিয়ান সাগর দিয়ে ট্যাংকারের মাধ্যমে ইরানকে অল্প পরিমাণ জ্বালানি সরবরাহ করেছিল রাশিয়া। কিন্তু এখন রুশ তেল কোম্পানিগুলো রেলপথে ইরানে ডিজেল ও পেট্রোল রপ্তানিতে আগ্রহী। কারণ সমুদ্রপথে রপ্তানি ব্যয় অনেক বেশি এবং শিল্পোন্নত দেশগুলোর পক্ষ থেকে রুশ জ্বালানির সর্বোচ্চ মূল্য বেঁধে দেওয়া হয়েছে।

তবে সূত্রগুলো বলছে, রেলপথে রপ্তানিও বারবার বাধার সম্মুখীন হয়। এক সূত্রের মতে, চলতি বছরে ইরানে জ্বালানি সরবরাহ বাড়ার আশা রয়েছে। কিন্তু রেলপথে ইতোমধ্যে লজিস্টিকস নিয়ে বেশকিছু সমস্যা রয়েছে। এসব সমস্যা ক্রমবর্ধমান রপ্তানিকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে।

কয়েক বছর ধরে ইরানের ওপর পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা রয়েছে এবং বিশ্ববাজারে দেশটির প্রবেশাধিকার সীমিত। রেলপথে জ্বালানি সরবরাহের বিষয়ে রাশিয়া ও ইরানের তেল মন্ত্রণালয় কোনো মন্তব্য করেনি।

গত বছর রাশিয়ার উপ-প্রধানমন্ত্রী আলেকজান্ডার নোভাক ইরানের সঙ্গে তেল পণ্যের বিনিময় সরবরাহ শুরু করার ঘোষণা দিয়েছিলেন। সূত্র জানিয়েছে, বাস্তবে এমন বিনিময় সরবরাহ শুরু হয়েছে চলতি বছর।

ইউক্রেনে মস্কো সামরিক অভিযান শুরুর পর রুশ তেল পণ্যের ওপর পশ্চিমাদের নিষেধাজ্ঞা বৈশ্বিক জ্বালানি বাজারকে নতুন রূপ দিয়েছে। এখন দূর পথে ট্যাংকার ব্যবহার করে জ্বালানি রপ্তানি করা হচ্ছে। একই সঙ্গে জ্বালানি পরিবহনের নতুন নতুন উপায়ও কাজে লাগানো হচ্ছে।

পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার আওতায় রয়েছে রাশিয়া ও ইরান। উভয় দেশ একে অপরের অর্থনীতিকে সহযোগিতা করে আসছে। পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার প্রভাব দুর্বল করতে তেহরান ও মস্কো ঘনিষ্ঠ হচ্ছে। উভয় দেশই পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞাকে অযৌক্তিক বলে দাবি করে আসছে।

সংবাদ সূত্রঃ রয়টার্স