চলতি মাসের শুরুর দিকে তুরস্ক-সিরিয়া সীমান্তে আঘাত হানা ‘শতাব্দীর ভয়াবহতম’ ভূমিকম্পে ৫০ হাজার ছাড়িয়েছে মৃত্যু সংখ্যা। এরমধ্যে তুরস্কে ৪৪ হাজারের বেশি এবং সিরিয়ায় প্রায় ৬ হাজার মানুষ মারা গেছে।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা আজ শনিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) তাদের সবশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদনে মৃত্যুর এ সংখ্যা উল্লেখ করে।
তুরস্কের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ (আফাদ) জানিয়েছে, শুক্রবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) পর্যন্ত দেশটিতে নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪৪ হাজার ২১৮ জনে। আর সিরিয়ার সরকার ও উদ্ধারকারী সংগঠনগুলোর তথ্য বলছে, যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটিতে ভূমিকম্পের আঘাতে প্রাণ হারিয়েছেন ৫ হাজার ৯১৪ জন।
ভয়াবহতম এ ভূমিকম্পে ১০ লাখেরও বেশি মানুষ গৃহহীন হয়েছেন। স্বেচ্ছাসেবকসহ প্রায় ২ লাখ ৪০ হাজার উদ্ধারকারী তুরস্কের ১১টি ভূমিকম্প-বিধ্বস্ত প্রদেশে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত কিছু এলাকায় প্রাথমিকভাবে প্রবেশ করা কঠিন ছিল কিন্তু পুনরুদ্ধারের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে এবং তাদের অগ্রগতির সাথে সাথে হতাহতের সংখ্যা বাড়ছে। সাম্প্রতিক দিনগুলোতে জীবিত কাউকে উদ্ধারের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
শুধুমাত্র তুরস্কের দুর্যোগ এলাকা থেকে প্রায় ৫ লাখ ৩০ হাজার লোককে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে এবং তুর্কি সরকার বলেছে যে ১ লাখ ৭৩ জাহার ভবন এখন পর্যন্ত ধসে পড়েছে বা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ১.৯ মিলিয়নেরও বেশি লোক অস্থায়ী আশ্রয়, হোটেল ও সরকারি ভবনে আশ্রয় নিয়েছে।
তুরস্কের প্রায় ২০ মিলিয়ন মানুষ ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অন্যদিকে জাতিসংঘের অনুমান ৮.৮ মিলিয়ন মানুষ সিরিয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সিরিয়া থেকে কম তথ্য এসেছে যেখানে বহু লোক গৃহযুদ্ধের পর ইতোমধ্যেই অনিশ্চিত পরিস্থিতিতে বসবাস করছে।
এদিকে, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোগান এক বছরের মধ্যে বাড়িঘর পুনর্নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
গত ৬ ফেব্রুয়ারি স্থানীয় সময় ভোর ৪টা ১৭ মিনিটে তুরস্ক-সিরিয়ার সীমান্ত অঞ্চলে আঘাত হানে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভয়াবহ ভূমিকম্প। এর কয়েক ঘণ্টা পরে ফের ৭ দশমিক ৬ মাত্রার ভূকম্পন অনুভূত হয় ওই অঞ্চলে। এতে পুরোপুরি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয় তুরস্কের দক্ষিণ এবং সিরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল। ভূমিকম্পের পর থেকে তুরস্কের দক্ষিণপূর্ব এবং সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে এ পর্যন্ত নয় হাজারের বেশি আফটারশক অনুভূত হয়েছে।
সংবাদ সূত্রঃ আল-জাজিরা