ডেনমার্কের রাজধানী কোপেনহেগেনের একটি মসজিদ ও তুরস্কের দূতাবাসের কাছে এক ইসলামবিরোধী কর্মী মুসলিমদের পবিত্র গ্রন্থ কোরআন পুড়িয়েছে। এ ঘটনায় কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে তুরস্ক।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। এর আগে ২১ জানুয়ারি সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমে উগ্র ডানপন্থীরা পবিত্র কোরআন পোড়ায়।
আলজাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ডেনমার্কের উগ্র ডানপন্থী রাজনৈতিক কর্মী রাসমুস পালুদান ও তার দল হার্ড লাইনের অনুসারীরা এ ঘটনার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত। রাসমাস পালুদান নামের ওই ব্যক্তি একই সঙ্গে ড্যানিশ ও সুইডিশ নাগরিক।
গতকাল শুক্রবার কোপেনহেগেনে যে মসজিদের সামনে পবিত্র কোরআন পোড়ানো হয়েছে, সেখানে এক ফেসবুক লাইভে রাসমাস পালুদান বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের সামরিক জোট ন্যাটোতে যতদিন সুইডেনকে অন্তর্ভুক্ত করা না হবে ততদিন এই কর্মসূচি অব্যাহত রাখবেন তিনি ও তার অনুসারীরা।
জানা গেছে, সুইডেন ও প্রতিবেশী ফিনল্যান্ড পশ্চিমাদের সামরিক জোট ন্যাটোতে যোগ দিতে চায়। কিন্তু এতে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে তুরস্ক। কারণ ন্যাটোতে যোগ দিতে হলে জোটের সবার অনুমোদন প্রয়োজন কিন্তু তুরস্ক সে অনুমোদন দিচ্ছে না। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে এভাবে প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন ওই ব্যক্তি।
গত বছর এপ্রিলে পালুদান ঘোষণা দেন, পবিত্র রমজান মাসে তিনি বিভিন্ন স্থানে ঘুরে ঘুরে পবিত্র কোরআন পোড়াবেন। তাঁর এ ঘোষণায় সুইডেনজুড়ে দাঙ্গা শুরু হয়েছিল। সেই ঘোষণা মোতাবেক তিনি প্রথমে সুইডেনে, এরপর ডেনমার্কে এ ঘটনা ঘটালেন।
শুক্রবার কোপেনহেগেনের তুরস্ক দূতাবাস ও তার নিকটবর্তী একটি মসজিদ— দুই জায়গায় পবিত্র কোরআন পোড়ানো হয়েছে। দু’বারই ফেসবুক লাইভে এসেছেন পালুদান। মসজিদের সামনে লাইভে তিনি বলেছেন, ‘এই মসজিদের কোনো স্থান ডেনমার্কে নেই।’ আর তুরস্কের দূতাবাসের সামনে লাইভে তিনি বলেছেন, ‘একবার যদি তিনি সুইডেনকে ন্যাটোতে প্রবেশ করতে দেন— আমি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি যে আর কোরআন পোড়াবো না; কিন্তু যদি তা না হয়, সেক্ষেত্রে প্রতি শুক্রবার দুপুর ২টার দিকে তুরস্কের দূতাবাসের সামনে আমি এ কাজ করব।’
এদিকে, শুক্রবার এই ঘটনার পর তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ডেনিস রাষ্ট্রদূতকে তলব কঠোরভাষায় প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছে।
অপরদিকে, ডেনমার্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লার্স লক্কি রাসমুসেন সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘বিশ্বের অন্যান্য সব দেশের মতো ডেনমার্কেও কিছু বিপথগামী লোকজন আছে, কিন্তু তারা দেশের অধিকাংশ জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্ব করে না। আমরা আশা করব— অনাকাঙ্ক্ষিত এই ঘটনার জেরে তুরস্কের সঙ্গে ডেনমার্কের সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হবে না।’
সংবাদ সূত্রঃ আলজাজিরা