ব্রিটিশ রাজপরিবারের গল্প লিখে প্রিন্স হ্যারির আয় ৪১৭ কোটি টাকা

ব্রিটিশ রাজপরিবারের গল্প লিখে প্রিন্স হ্যারি ৪১৭ কোটি টাকার বেশি আয় করেছেন। বর্তমানে তিনি রাজপরিবার ছেড়ে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় বাস করছেন। প্রথম দিনেই বইটির ১৪ লাখ কপি বিক্রি হয়েছে। নিজের বইয়ের তাকে হ্যারির বইটি রাখতে যেন ব্যস্ত হয়ে পড়ছেন উৎসুক পাঠকরা। অনেকে তো প্রথম দিনেই বইটি বিক্রিতে ছাড় দিয়েছেন।

বইটি গত মঙ্গলবার আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশিত হওয়ার আগে বৃহস্পতিবার একটি প্রথম সারির ব্রিটিশ দৈনিকসহ ইউরোপের বেশ কিছু সংবাদমাধ্যমে ছাপা হয়ে গিয়েছিল বইয়ের নানা তথ্য। বইটি প্রকাশের আগে হ্যারি ও মেগান ব্রিটেন ও যুক্তরাষ্ট্রের চারটি মিডিয়াকে সাক্ষাৎকার দেন। গত বৃহস্পতিবার বইটির স্প্যানিশ সংস্করণের কপি বাজারে আসে এবং বইটির বিষয়বস্তু ফাঁস হয়ে যায়।

প্রিন্স হ্যারির ‘স্পেয়ার’ বইটি প্রকাশ করেছে পেঙ্গুইন র‍্যান্ডম হাউজ। বইটি ১৬টি ভাষা ও অডিওবুক হিসেবে পাওয়া যাচ্ছে। প্রকাশ হওয়ার আগে হ্যারি জানিয়েছিলেন, তিনি বই বিক্রির অর্থ দাতব্য সংস্থায় দান করবেন বলে জানিয়েছেন। বইটি লিখে প্রিন্স হ্যারি কত টাকা পেয়েছেন তা নিয়ে বিভিন্ন রকম তথ্য পাওয়া গেছে। গুঞ্জন আছে যে পেঙ্গুইন র‍্যান্ডম হাউজ তাকে ২০ মিলিয়ন ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ২০৯ কোটি টাকা)। তবে কানাডার একটি গণমাধ্যম জানিয়েছে, প্রিন্স হ্যারির সঙ্গে ‘স্পেয়ার’ নিয়ে চারটি সংস্করণের বিষয়ে চুক্তি হয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী তাকে ৩৫ মিলিয়ন ডলার থেকে ৪০ মিলিয়ন ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৩৬৫ কোটি থেকে ৪১৭ কোটি টাকা) প্রিন্সকে দেবে পেঙ্গুইন র‍্যান্ডম হাউজ। বইটিতে প্রিন্স হ্যারির জবানিতে রাজপরিবারের অন্তর্দ্বন্দ্বই বেশি গুরুত্ব পেয়েছে। এছাড়া প্রিন্স হ্যারি তার মা ডায়নার কথা বারবার উল্লেখ করেছেন। মা ছাড়া হ্যারির বেড়ে ওঠা, ব্রিটিশ সিংহাসনের অন্যতম উত্তরাধিকারী প্রিন্স উইলিয়াম ও তার স্ত্রী কেটের সঙ্গে দ্বন্দ্ব, সৎ-মা ক্যামিলা, রাজপরিবারে বর্ণবাদ ও হিংসা-বিদ্বেষ, ব্রিটিশ গণমাধ্যমের সমালোচনা এবং তার মাদকসেবনের তথ্যও বইটিতে স্থান পেয়েছে।

বইটি প্রকাশিত হওয়ার পরে হ্যারি ও ব্রিটেনের রাজপরিবার ছাড়াও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছে আর একটি নাম জে আর মোরিঙ্গার। তিনি হ্যারির বইয়ের ‘গোস্ট রাইটার’ অর্থাৎ নেপথ্য লেখক। অর্থাৎ প্রিন্সের জবানিতে হলেও বইটি মোরিঙ্গারেরই লেখা। বিখ্যাত ব্যক্তিদের আত্মজীবনীর নেপথ্য লেখক হিসেবে যথেষ্ট নাম আছে পুলিত্জার পুরস্কারজয়ী সাংবাদিক মোরিঙ্গারের।

সাম্প্রতিক এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছেন, কারো আত্মজীবনী লেখার আগে সেই মানুষটার মাথার ভিতর ঢুকে পড়ার চেষ্টা করেন তিনি। তাই মনোবিজ্ঞানী সিগমুন্ড ফ্রয়েড এবং কার্ল ইয়ুংয়ের লেখা পড়ে নিজেকে তৈরি করেন তিনি। জানা গেছে, হলিউড তারকা জর্জ ক্লুনি মোরিঙ্গারের সঙ্গে আলাপ করে দিয়েছিলেন হ্যারির। এই বইটি লেখার জন্য ১০ লাখ ডলার (১০ কোটি ৪৩ লাখ টাকার বেশি) পারিশ্রমিক নিয়েছেন মোরিঙ্গার।

সংবাদ সূত্রঃ রয়টার্স ও দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট