বিশ্বে করোনা সংক্রমণ আবারও বাড়ছে, ভারতে সতর্কতা জারি

আবারও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাড়তে শুরু করেছে করোনা সংক্রমণ। গতকাল বুধবার (২১ ডিসেম্বর) জাপানে করোনা শনাক্ত হয়েছে প্রায় ১ লাখ ৯০ হাজার মানুষের দেহে। এ ছাড়া দক্ষিণ কোরিয়া, ফ্রান্স, জার্মানি, ব্রাজিলসহ যুক্তরাষ্ট্রেও বাড়ছে আক্রান্তের হার। ভারতে নতুন করে কোভিড সতর্কতা জারি করা হয়েছে।

বিশ্বে করোনা সংক্রমণের হার বিগত কয়েক মাস ধরেই ছিল নিম্নমুখী। বিভিন্ন দেশের সরকার কোভিডের কঠোর সব বিধিনিষেধ তুলে নেয়। তবে শীত মৌসুম শুরু হতে না হতেই আবারও বাড়তে শুরু করেছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা।

জাপানের স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে, বুধবার (২১ ডিসেম্বর) দেশটিতে প্রায় ১ লাখ ৯০ হাজার করোনা রোগি শনাক্ত হয়েছে, যা আগস্ট মাসের পর দেশটিতে সর্বোচ্চ। প্রশাসন বলছে বিধিনিষেধ শিথিল করায় কেবল নভেম্বর মাসেই ১০ লাখের বেশি পর্যটকের আগমন হয় জাপানে। এটিকেই সংক্রমণ বাড়ার প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে কর্তৃপক্ষ। তবে আবারও বিধিনিষেধ দেয়া হবে কিনা সে বিষয়ে এখনো কোন সিদ্ধান্ত জানায়নি দেশটির সরকার।

জাপানের পাশাপাশি দক্ষিণ কোরিয়া, ফ্রান্স, জার্মানি ও ব্রাজিলেও বেড়েছে আক্রান্তের সংখ্যা। বুধবার দক্ষিণ কোরিয়ায় করোনা শনাক্ত হয় প্রায় ৯০ হাজার মানুষের। একই দিন ফ্রান্সে প্রায় ৭২ হাজার, জার্মানিতে ৫৩ হাজার ও ব্রাজিলে ৫০ হাজার করোনা আক্রান্ত হয়েছে বলে জানায় আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম।

অন্যদিকে চীনে গণবিক্ষোভের মুখে পড়ে করোনার কঠোর বিধিনিষেধ শিথিলের পড় হু হু করে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। বুধবারও আক্রান্ত হন আড়াই হাজারের বেশি। আর গত দুদিনে মৃত্যু হয়েছে ১০ জনের। তবে সংক্রমণ বাড়লেও সাধারণ মানুষ এখনো ভ্যাকসিন নিতে অনীহা প্রকাশ করছেন বলে জানিয়েছে দেশটির স্বাস্থ্য বিভাগ।

এদিকে চীনে নতুন করে করোনা বাড়তে থাকায় গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। এর আগে মহামারি বিশেষজ্ঞ এবং স্বাস্থ্য অর্থনীতিবিদ এরিক ফিল-ডিং শঙ্কা প্রকাশ করে জানান, বর্তমান অবস্থা চলতে থাকলে আগামী ৯০ দিনের মধ্যে চীনের জনসংখ্যার ৬০ শতাংশ অর্থাৎ প্রায় ৮৫ কোটি মানুষ এ ভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারে।

অন্যদিকে চীনসহ বিভিন্ন দেশে কোভিডের সংক্রমণ বাড়তে থাকায় ভারতে নতুন করে কোভিড সতর্কতা জারি করা হয়েছে। বুধবার এক বিবৃতিতে দেশটির কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মান্ডবীয় জানান, চীনে করোনার নতুন যে রূপটি এখন আতঙ্ক ছড়াচ্ছে, অমিক্রনের সেই ‘বিএফ.৭’– আক্রান্ত তিনজন রোগীর সন্ধান পাওয়া গেছে ভারতে। পরিস্থিতি নাজুক মন্তব্য করে সবাইকে সতর্ক থাকতে বলেন মান্ডবীয়। একই সঙ্গে গণপরিবহনসহ যে কোনো জনসমাগমস্থলে সবাইকে মাস্ক পরে চলাচলের আহ্বান জানান তিনি।

ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সব রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলকে কোভিড পরীক্ষা বাড়ানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সংগৃহীত নমুনা জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের জন্য কেন্দ্রের অনুমোদিত ‘ইনস্যাকোগ’ পরীক্ষাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে। নমুনার জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের ফলে জনগোষ্ঠীর মধ্যে কোভিডের নতুন কোনো প্রজাতি মিলছে কি না, তার একটা ধারণা পাওয়া যাবে।