লাতিন আমেরিকার মধ্যে সবচেয়ে বেশি মুসলিম আর্জেন্টিনায়

আর্জেন্টিনা, অরণ্যভূমি, মরুভূমি, তুন্দ্রাভূমি, সুউচ্চ সব পর্বতশৃঙ্গ, নদনদী আর হাজার হাজার কিলোমিটার দীর্ঘ আটলান্টিক মহাসাগরীয় উপকূলভূমির দেশ। দক্ষিণ আটলান্টিক মহাসাগরের অনেকগুলি দ্বীপ আর্জেন্টিনা নিজেদের বলে দাবি করে, যার মধ্যে ব্রিটিশ-শাসিত ফকল্যাণ্ড দ্বীপপুঞ্জ অন্যতম। এর বাইরে অ্যান্টার্কটিকা মহাদেশের একটি অংশও আর্জেন্টিনা নিজের বলে দাবি করে। দেশটিতে নানা জাতিগোষ্ঠীর লোক বসবাস করে।

২০১০ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী, আর্জেন্টিনার মোট জনসংখ্যা ৪ কোটি ১ লাখ ১৭ হাজার ০৯৬ জন, যা ২০০১ সাল থেকে ৩ কোটি ৬ লাখ ২ লাখ ৬০ হাজার ১৩০ জন বেশি। দক্ষিণ আমেরিকায় মোট জনসংখ্যায় আর্জেন্টিনা তৃতীয়, ল্যাটিন আমেরিকায় চতুর্থ এবং বিশ্বব্যাপী ৩৩তম।

এই দেশের জনসংখ্যার ঘনত্ব প্রতি বর্গকিলোমিটার ভূমি এলাকায় ১৫ জন, যা বিশ্বের গড় ৫০ জনের চেয়ে অনেক কম। ২০১০ সালে জনসংখ্যা বৃদ্ধির বার্ষিক হার ছিল আনুমানিক ১.০৩ শতাংশ প্রতি ১ হাজার জন বাসিন্দার মধ্যে জীবিত জন্মের হার ১৭.৭ এবং প্রতি ১ হাজার জন বাসিন্দার মধ্যে মৃত্যুর হার ৭.৪।

আর্জেন্টিনা মূলত খ্রিষ্টান প্রধান দেশ। আর্জেন্টিনার ৯১ শতাং মানুষ খ্রিস্টান ২ শতাংশ মুসলমান এবং ৪ শতাংশ হিন্দু বাকি সব অন্যান্য ধর্মের লোক সেখানে বসবাস করেন।

লাতিন আমেরিকার দেশগুলোর মধ্যে মোট জনসংখ্যার বিচারে আর্জেন্টিনায় সবচেয়ে বেশি মুসলিম বাস করে। জানা যায়, মুসলমানরা ধর্মীয় দিক থেকে বেশ স্বাধীনভাবেই এখানে ধর্ম পালন করতে পারে। একমাস রোজা পালন এবং বছরের দুই ঈদসহ সব ইসলামি উৎসব তারা বেশ আনন্দের সঙ্গে পালন করে।

ইতিহাস অনুযায়ী, আর্জেন্টিনায় যখন স্প্যানিশ ও পর্তুগিজ কলোনি ছিল সেই সময় থেকেই সেখানে কাজ করার জন্য বহু পশ্চিম আফ্রিকান মানুষকে আনা হতো। স্বভাবতই তারা ছিল মুসলিম। পরবর্তীকালে সিরিয়া, লেবাননসহ বিভিন্ন আরব দেশ থেকে অনেক মুসলিম অভিবাসী এখানে এসে বসত গড়ে। বর্তমানে বেশির ভাগ মুসলিমই দেশটির রাজধানী বুয়েনস আইরেসে বসবাস করে।

আর্জেন্টিনার রাজধানীতে রয়েছে সুদৃশ্য মসজিদ ও ইসলামি সংস্কৃতির কেন্দ্র। সৌদি আরবের বাদশহ ফাহাদের নামানুসারে মসজিদটির নামকরণ করা হয়েছে ‘কিং ফাহাদ’ বা “Custodian of the Two Holy Mosques King Fahd in Argentina”। এটি লাতিন আমেরিকার বৃহত্তম মসজিদ। ২০০০ সালে এই মসজিদ উদ্বোধন করা হয়। আর্জেন্টিনার সরকার জমি দান করে এবং মসজিদ কমপ্লেক্সটি নির্মাণে ব্যায় বহন করে সৌদি সরকার। এই মসজিদে ১২শত পুরুষ এবং চারশো নারীর জন্য পৃথক নামাজের জায়গা রয়েছে।