আফগানিস্তানে তালেবানের ক্ষমতা দখলের প্রথম বার্ষিকী পালন

ঠিক একবছর আগে ৩১ আগস্ট মার্কিন সেনা ছেড়েছিল কাবুল। এর প্রেক্ষিতে গতকাল বুধবার তার প্রথম বার্ষিকী পালন করলো তালেবান।

তালেবান জানিয়েছিল, মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের ও তাদের ক্ষমতা দখলের প্রথম বার্ষিকী তারা পালন করবে \’ফ্রিডম ডে\’ বা স্বাধীনতা দিবস হিসাবে। গতকাল বুধবার সারাদিন তারা সেই স্বাধীনতা দিবসের উৎসব পালন করলো। মার্কিন ও বিদেশি সেনার কাছ থেকে তারা যে সামরিক যান দখল করেছিল, তার প্রদর্শনী করা হলো। সেই সঙ্গে তারা দাবি জানালো, এক বছর হয়ে গেছে, এবার আন্তর্জাতিক দুনিয়াতাদের স্বীকৃতি দিক।

তবে তাদের এই উৎসব ও প্যারেডে প্রবেশাধিকার দেয়া হয়নি কোন বিদেশি মিডিয়াকে।

\’ফ্রিডম ডে\’

তালেবান সরকারের মুখপাত্র বুধবার সকালে আফগানদের \’ফ্রিডম ডে\’-র শুভেচ্ছা জানান। সরকার বিবৃতি দিয়ে জানায়, \’\’মার্কিন দখলদারি থেকে দেশের মুক্তির এক বছর পূর্ণ হলো। এই দখলদারি মুক্ত করতে প্রচুর মুজাহিদিন প্রাণ দিয়েছেন, অসংখ্য বাচ্চা অনাথ হয়েছে, প্রচুর নারী বিধবা হয়েছেন।\’\’

টেলিভিশন ফুটেজে দেখা গেছে, তালেবান যোদ্ধারা মার্চ করছেন এবং তাদের মাথার উপর দিয়ে হেলিকপ্টার যাচ্ছে। এই উৎসবের অঙ্গ ছিল অ্যামেরিকার নেতৃত্বাধীন বাহিনীর কাছ থেকে দখল করা সামরিক যান। সেই যানগুলিও প্যারেডের অংশ নিয়েছিল।

উৎসব অবশ্য মঙ্গলবার রাত থেকেই শুরু হয়ে যায়। রাতের আকাশ ভরে যায় বাজির আলোয়। আফগানিস্তানের সরকারি ভবনে ব্যানার লাগানো হয়েছিল। সেখানে অ্যামেরিকা, সোভিয়েত ইউনিয়ন ও ব্রিটেনের বিরুদ্ধে জয়ের কথা বলা হয়েছে।

আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি

মার্কিন বাহিনীর কাবুল ত্যাগের বর্ষপূর্তির দিনে তালেবানের প্রধান দাবি ছিল, তাদের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দিতে হবে। তালেবানের তরফে একটি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গত ২০ বছরের অভিজ্ঞতা হলো, আফগানিস্তানের মানুষকে ভয় দেখিয়ে দমিয়ে রাখা যায় না। বিদেশি চাপ ব্যর্থ হয়েছে। বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, তালেবান সরকার হলো দেশের ন্যায্য সরকার, তারা আফগানিস্তানের সাহসী মানুষের প্রতিনিধিত্ব করে। আন্তর্জাতিক দুনিয়ার কাছে তাদের আবেদন, তারা যেন এই সরকারকে স্বীকৃতি দেয়।

কিন্তু মানবাধিকার ও নারীদের অধিকারের প্রসঙ্গ তুলে বিশ্বের অধিকাংশ দেশই আফগানিস্তানের তালেবান শাসনকে স্বীকৃতি দেয়নি।

২০২১ সালের ৩১ অগাস্ট মার্কিন সেনা কাবুল ছাড়ে। তার আগের দুই দশকে প্রায় ৬৬ হাজার আফগান সেনা, ৪৮ হাজার বেসামরিক মানুষ এবং ২৪ হাজার মার্কিন সেনার মৃত্যু হয়েছে।

সংবাদ সূত্রঃ ডয়চে ভেলে