ইউক্রেন সংঘাত ছড়িয়ে পড়ার পর রাশিয়া থেকে চীনের শতকরা ৭৫ ভাগ জ্বালানি আমদানি বেড়ে গেছে। দেশটিতে রাশিয়ার সামরিক অভিযানকে কেন্দ্র করে মার্কিন নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা দেশগুলো লাগামহীনভাবে মস্কোর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার পরই রাশিয়া থেকে জ্বালানি আমদানি ব্যাপক মাত্রায় বাড়িয়ে দিয়েছে চীন। এ তথ্য ব্লুমবার্গের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়।
চীন যেখানে রাশিয়া থেকে বছরে দুই হাজার কোটি ডলারের তেল, গ্যাস এবং কয়লা কিনতো সেখানে মার্চ মাস থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত সময়ে সাড়ে তিন হাজার কোটি ডলারের জ্বালানি আমদানি করেছে দেশটি।
অবশ্য ইউক্রেন সংঘাত ছড়িয়ে পড়ার পর পশ্চিমা দেশগুলোর নিষেধাজ্ঞার মুখে রাশিয়া কিছুটা কম মূল্যে তেল-গ্যাস বিক্রির ঘোষণা দেয়। মস্কোর কাছ থেকে চীন সেই সুযোগ নিয়েছে।
শুধুমাত্র জুলাই মাসে রাশিয়া থেকে চীন ৭৪ লাখ টন কয়লা আমদানি করেছে যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে শতকরা ১৪ ভাগ বেশি। এর মাধ্যমে চীনে কয়লা রপ্তানির ক্ষেত্রে রাশিয়া এখন শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে। এর আগে ইন্দোনেশিয়া ছিল চীনের প্রধান কয়লা সরবরাহকারী দেশ। একইভাবে রাশিয়া থেকে এলএনজি কেনার পরিমাণ ও শতকরা ২০ ভাগ বাড়িয়েছে চীন।
একই পথে হাঁটছে তুরস্কও। রুশ জ্বালানি আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার বদলে কেনা বাড়িয়ে দিয়েছে তারা। চলতি বছর রাশিয়া থেকে দ্বিগুণ অপরিশোধিত তেল আমদানি করেছে তুরস্ক, যা মস্কোর ইউরোপীয় বাজার হারানোর ক্ষতি খানিকটা হলেও পুষিয়ে দিয়েছে।
গত ফেব্রুয়ারি রুশ বাহিনী ইউক্রেন আক্রমণের পর পশ্চিমা সংস্থাগুলো রাশিয়া থেকে তাদের ব্যবসা গোটাতে শুরু করে। কিন্তু তখন থেকেই তুরস্ক-রাশিয়ার বাণিজ্য উল্টো বাড়তে থাকে।
রেফিনিটিভ এইকনের তথ্য অনুসারে, চলতি বছর এ পর্যন্ত দৈনিক দুই লাখ ব্যারেলের বেশি রুশ তেল আমদানি করেছে তুরস্ক। রাশিয়ার ইউরালস ও সাইবেরিয়ান লাইট উভয় ধরনের তেলই কিনেছে তারা। অথচ গত বছর একই সময়ে তুরস্কের রুশ তেল আমদানির পরিমাণ ছিল দৈনিক মাত্র ৯৮ হাজার ব্যারেল।
ইউরোপের দাবি মেনে তুরস্ক রাশিয়ার ওপর কোনো নিষেধাজ্ঞা দিতে রাজি হয়নি। তাদের রুশ জ্বালানির ওপর নির্ভরতাও কমেনি। চলতি মাসের শুরুর দিকে মুখোমুখি বৈঠকে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য আরও বাড়াতে সম্মত হয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান।
সংবাদ সূত্রঃ ব্লুমবার্গ