মস্কোর বিরুদ্ধে নজিরবিহীন পদক্ষেপ নিয়েছে ইউরোপ মহাদেশের প্রধান মানবাধিকার সংস্থা ‘দ্য কাউন্সিল অব ইউরোপ’। সংস্থাটি গতকাল বুধবার তাদের সদস্যপদ থেকে রাশিয়াকে বহিষ্কার করেছে।
৪৭-জাতির এই সংস্থার মন্ত্রীপরিষদের একটি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘রাশিয়ান ফেডারেশন আজ (বুধবার) থেকে দ্যা কাউন্সিল অব ইউরোপের সদস্য নয়।
এই সিদ্ধান্ত জানানোর পর প্রতীকী কিছু পদক্ষেপও নেওয়া হয়েছে। যার অংশ হিসাবে ফ্রান্সের স্ট্রসবার্গ শহরে অবস্থিত কাউন্সিল অব ইউরোপ-এর সদর দফতরের বাইরে টানানো রাশিয়ার পতাকা নামিয়ে নিয়েছে কর্মীরা।
গত ২৬ বছর ধরে রাশিয়া এই সংস্থার সদস্য ছিল। নতুন সিদ্ধান্তের ফলে নেতিবাচক ভাবে এই অধ্যায়ের অপ্রয়োজনীয় সমাপ্তি হলো। রাশিয়ার বিরুদ্ধে এই মুহূর্তে এই ধরণের পদক্ষেপ খুবই প্রয়োজনীয় ছিল।
সুইডিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান লিন্ডে বলেছেন, ‘রাশিয়ার পদক্ষেপের কারণেই এমন পরিণতি। আমরা আন্তরিকভাবে আশা করি রাশিয়া একদিন শান্তি ও গণতন্ত্রের আদর্শে ফিরে আসবে এবং তার সদস্যপদ ফিরে পাবে।’
এর আগে গত ১০ মার্চ রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতি দিয়ে কাউন্সিল অব ইউরোপ থেকে বেরিয়ে আসার ঘোষণা দিয়ে ছিলো। বিবৃতিতে বলা হয়, ‘রাশিয়া আর কাউন্সিল অব ইউরোপে অংশ নেবে না। ন্যাটো ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলো কাউন্সিল অব ইউরোপের ক্ষতি করছে।’
এ বিষয়ে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন তাস নিউজ এজেন্সির প্রতিবেদনে বলা হয়, ইউক্রেনে রুশ বাহিনীর সামরিক অভিযানের কারণে রাশিয়ার প্রতিনিধিকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে কাউন্সিল অব ইউরোপের প্যান-ইউরোপীয় মানবাধিকার সংস্থা। যে কোনো সময় কাউন্সিল অব ইউরোপ থেকে রাশিয়াকে বহিষ্কার করা হতে পারে আশঙ্কা থেকে নিজেরাই ইউরোপ কাউন্সিল থেকে বেরিয়ে এসেছে মস্কো।
তবে কাউন্সিল অফ ইউরোপ বলছে, রাশিয়ার প্রতিনিধিকে বহিষ্কার কোনো চিরস্থায়ী পদক্ষেপ নয়। এটি সাময়িক একটি ব্যবস্থা।
ইউরোপীয় অঞ্চলের ৪৭টি দেশ নিয়ে গঠিত কাউন্সিল অব ইউরোপ। সংস্থাটির মূল লক্ষ্য ইউরোপে মানবাধিকার, গণতন্ত্র ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা। এটি ১৯৪৯ সালে গঠিত হয়। এর সদরদপ্তর ফরাসি-জার্মান সীমান্তের স্টার্সবর্গে।
এদিকে, মানবাধিকার সংস্থা থেকে বহিষ্কারের ফলে দেশটি পুনরায় মৃত্যুদণ্ড চালু করতে পারবে বলে জানিয়েছেন রাশিয়ার নিরাপত্তা পরিষদের ডেপুটি চেয়ারমান দিমিত্রি মেদভেদেভ।
সংবাদ সূত্রঃ এপি