সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ট্যাক্সি চালক হিসেবে কাজ করেছিলেন। গতকাল রোববার (১২ ডিসেম্বর) তিনি নিজেই এই তথ্য জানিয়েছেন। পুতিন জানান, সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনে তিনি দুঃখ পেয়েছিলেন। সেই সময় নিজের খরচ মেটাতে তিনি ট্যাক্সি ড্রাইভার হিসেবেও কাজ করেছেন।
এছাড়া ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের ফলে সৃষ্ট অর্থনৈতিক মন্দার কারণে রাশিয়ার অনেক বাসিন্দা অর্থ আয়ের জন্য নানা ধরনের কাজ শুরু করেছিলেন। আজ সোমবার (১৩ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি ও সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের মাধ্যমে ঐতিহাসিক রাশিয়ার পতন হয়েছিল বলে প্রেসিডেন্ট পুতিন বর্ণনা করেছেন। আর এর মাধ্যমে সাবেক সোভিয়েত রিপাবলিক ইউক্রেন ঘিরে পুতিনের বিশেষ উদ্দেশ্য রয়েছে বলে যে গুজব রয়েছে, তার এই মন্তব্য সেটি আরও উস্কে দিয়েছে।
ইউক্রেন সীমান্তে রাশিয়া ৯০ হাজারের বেশি সেনা জড়ো করেছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে যে, দেশটি অভিযান চালাতে পারে ইউক্রেনে। তবে রাশিয়া সেটি নাকচ করে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে উসকানি দেওয়ার অভিযোগ করেছে। সেই সঙ্গে পূর্বাঞ্চলে যাতে সামরিক জোট ন্যাটোর বিস্তার না ঘটে, তার নিশ্চয়তাও দাবি করেছে।
গতকাল রোববার ‘রাশিয়া, সর্বশেষ ইতিহাস’ নামে প্রচারিত একটি তথ্যচিত্রে প্রেসিডেন্ট পুতিন এই মন্তব্য করেন। সেখানে তিনি আরও বলেন, ‘সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার মাধ্যমে আসলে ঐতিহাসিক রাশিয়া বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। অবশ্য পশ্চিমা দেশগুলোর অনেকের বিশ্বাস ছিল যে, কম সময়ের মধ্যেই রাশিয়া আরও টুকরো টুকরো হয়ে যাবে।’
সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের বিষয়টি পুতিনের জন্য যে দুঃখজনক ছিল, এই তথ্য আগেই জানা গিয়েছিল। কিন্তু সেই সময় তিনি ব্যক্তিগতভাবে কী ধরনের সমস্যায় পড়েছিলেন, সেই তথ্য একেবারে নতুন।
পুতিনের ভাষায়, ‘(সোভিয়েত পতনের পর) অনেক সময় আমাকে বাড়তি অর্থ রোজগার করতে হতো। তখন ব্যক্তিগত গাড়ির চালক হিসেবে আমি বাড়তি কিছু অর্থ আয় করতাম। সত্যি কথা বলতে, এ বিষয়ে কথা বলাটা অস্বস্তিকর, কিন্তু এটিই ছিল ঘটনা।’
সেই সময় রাশিয়ায় ট্যাক্সি সেবা তেমন ছিল না। তখন অনেক ব্যক্তিগত গাড়ির মালিক বাড়তি অর্থ আয় করার জন্য যাত্রীদের পরিবহন সেবা দিতেন। অনেকে এমনকি অ্যাম্বুলেন্সের মতো যানবাহনও ট্যাক্সি হিসেবে ব্যবহার করতেন।
সোভিয়েতেইউনিয়নের গুপ্তচর সংস্থা কেজিবির একজন সাবেক এজেন্ট হিসেবে পরিচিত ভ্লাদিমির পুতিন। তবে নব্বইয়ের দশকে তিনি সেন্ট পিটার্সবার্গের মেয়র অ্যানাতোলি সোবচাকের দফতরে চাকরি করতেন।
তিনি বরাবরই বলে এসেছেন, ১৯৯১ সালের আগস্টে সোভিয়েত প্রেসিডেন্ট মিখাইল গর্বাচেভের বিরুদ্ধে অভ্যুত্থানের পর পদত্যাগ করেন। ওই অভ্যুত্থান ঘটনার পরপরই সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙ্গে যায়।
সংবাদ সূত্রঃ বার্তাসংস্থা এএফপি ও বিবিসি