উন্মোচিত হল বিশ্বের প্রথম বৈদ্যুতিক জাহাজ

বৈশ্বিক উষ্ণতা হ্রাসে বিকল্প নেই কার্বন নির্গমন কমানোর। এ লক্ষ্য থেকেই নরওয়ে উন্মোচন করল বিশ্বের প্রথম সম্পূর্ণ বৈদ্যুতিক ও স্বয়ংক্রিয় মালবাহী জাহাজ। গত শুক্রবার ‘ইয়ারা বার্কল্যান্ড’ নামের জাহাজটি গণমাধ্যমকে দেখানো হয়।

জাহাজটির আরেকটি বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, এটি চলতে সক্ষম চালকবিহীন বা স্বয়ংক্রিয়ভাবে। জাহাজটি সম্পর্কে বলা হচ্ছে, কার্বন নির্গমন কমানোর ক্ষেত্রে এটি ছোট পদক্ষেপ হলেও তা সামুদ্রিক শিল্পের ক্ষেত্রে জলবায়ু বিপর্যয় রোধে ভূমিকা রাখতে পারবে।

নরওয়ের দক্ষিণ-পূর্ব শহর পোরসগ্রুনের একটি কারখানা থেকে ৮ মাইল দূরে ব্রেভিক বন্দরে ১২০ কনটেইনার সার পাঠানোর মাধ্যমে জাহাজটির কার্যক্রম শুরু হয়। জাহাজটি চলাচলের ফলে বছরে প্রায় ৪০ হাজার ডিজেলচালিত ট্রাক চলার প্রয়োজনীয়তা দূর হবে। এতে পরিবেশদূষণ কমবে।

নরওয়ের সার প্রস্তুতকারক ইয়ারার প্রধান নির্বাহী সভেন টোরে হলসেথার জানান, স্বয়ংক্রিয় ও পরিবেশবান্ধব জাহাজ তৈরিতে অসুবিধা ও সমস্যা রয়েছে। এ জাহাজের সামনে দাঁড়িয়ে দেখতে পাচ্ছি, আমরা এটি করতে পেরেছি। এটিই বড় পুরস্কার বলে মনে হচ্ছে।

ইয়ারা কর্তৃপক্ষ বলছে, ৮০ মিটার দৈর্ঘ্যের এবং ৩ হাজার ২০০ টন ধারণ ক্ষমতার এই জাহাজ আগামী ২ বছর ধরে পরীক্ষামূলকভাবে চলাচল করবে। এ সময় জাহাজটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে চলাচলের কলাকৌশল শিখবে।

হলসেথার বলেন, আগামী চার-পাঁচ বছরের মধ্যে পুরো হুইল হাউস বিলুপ্ত হয়ে যেতে পারে। এতে লাগানো সেন্সরের সাহায্যে নিজে থেকে পুরো যাত্রা সম্পন্ন করতে পারলে আর চালকের প্রয়োজন হবে না।

প্রকল্প ব্যবস্থাপক জস্টেইন ব্রাটেন জানান, জাহাজ চলার সময় চালকের ভুলে অনেক কিছু ঘটতে পারে। চালকের ক্লান্তির কারণে এসব ভুল ঘটে যেতে পারে। স্বয়ংক্রিয় জাহাজ চালানো সম্ভব হলে নিরাপদ যাত্রা নিশ্চিত করা যেতে পারে।

ইয়ারা জাহাজটি যতটুকু পথ পাড়ি দেবে, তার দূরত্ব কম হলেও যাত্রাপথে অনেক বাধা রয়েছে। এটিকে অনেক সরু চ্যানেল পাড়ি দিতে হবে এবং সেতুর নিচ দিয়ে যেতে হবে। এ ছাড়া যাত্রাপথে অনেক বাণিজ্যিক জাহাজ ও নৌকা থাকবে। আগামী কয়েক মাস জাহাজটির শিক্ষার সময়। যাত্রাপথে জাহাজটিকে অন্য বস্তু চিনতে শিখতে হবে। এরপর সেই বস্তুর সঙ্গে কেমন আচরণ করতে হবে তা–ও শিখতে হবে।

এ ছাড়া স্বয়ংক্রিয় নেভিগেশনের জন্য নতুন নিয়ম প্রয়োজন হবে। এখন পর্যন্ত এ ধরনের কোনো নীতিমালা নেই।

সংবাদ সূত্রঃ এএফপি

Scroll to Top