মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী ও বিদ্রোহীদের মধ্যে সংঘাতে নিহত হয়েছেন অন্তত ৩০ জান্তা সেনা। গত সোমবার (১১ অক্টোবর) সকালে সাগাইং অঞ্চলে সেনাবাহিনীর শুদ্ধি অভিযানে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
রেডিও ফ্রি এশিয়ার খবরে বলা হয়েছে, পেইল শহরতলির বাইরে ভূমিমাইন বিস্ফোরণের কবলে পড়ে একটি সামরিক বহর। এতে সামরিক বাহিনীর একজন কৌশলগত কমান্ডারসহ ৩০ সরকারি সেনা নিহত হয়েছে।
মিয়ানমারের পিপলস ডিফেন্স ফোর্সের মুখপাত্র বোহ নাগার বলেন, রোববার থেকেই আমরা সামরিক বহরের অপেক্ষায় ছিলাম। একজন জ্যেষ্ঠ কমান্ডারও আসছেন বলে আমরা জানতে পেরেছি।
তিনি ২৩টি সামরিক যানের মাঝখানের একটি ছোট্ট গাড়িতে বসা ছিলেন জানিয়ে সামরিক মুখপাত্র বলেন, আমরা খুব ধৈর্য সহকারে অপেক্ষায় ছিলাম। তার মাথায় মারাত্মক আঘাত লেগেছিল। এখানে বিদ্রোহীরা মারাত্মকভাবে সক্রিয় রয়েছে। দুপক্ষের মধ্যে রক্তক্ষয়ী লড়াই হয়েছে।
গেল পহেলা ফেব্রুয়ারিতে জ্যেষ্ঠ জেনারেল অং হ্লাইংয়ের নেতৃত্বে সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে মিয়ানমারে অস্থিতিশীলতা চলছে। শান্তিতে নোবেলজয়ী অং সান সু চির নেতৃত্বাধীন বেসামরিক সরকারকে উৎখাতের পর এক বছরের জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে।
অভ্যুত্থানের পর থেকেই দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশটিতে জান্তাবিরোধী ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছে। এতে এক হাজার ১৬৭ বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। গ্রেফতার করা হয়েছে সাত হাজার ২১৯ জনকে। বিদ্রোহীদের সঙ্গে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর সংঘাতও ক্রমে বাড়ছে। কেবল গত মাসেই ১৩২টি সংঘাত হয়েছে।
এদিকে স্যাগাইং অঞ্চলের কেইল শহরতলি থেকে সামরিক হেলিকপ্টারে উচ্চ পদমর্যাদার সামরিক কর্মকর্তাদের পরিবার সদস্যদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। দেশটির সবচেয়ে অস্থিতিশীল অঞ্চলগুলোতে তিন হাজার সেনা ও অস্ত্র মোতায়েনের পর এমন খবর এসেছে। এছাড়া বেসামরিক প্রতিরোধ বাহিনীগুলোর বিরুদ্ধে শুদ্ধি অভিযান চালাতে সামরিক বহর পাঠানো হচ্ছে।
কৌশলগত শহর বলে পরিচিত কেইলের চারপাশে বেশ কয়েকটি সামরিক ঘাঁটি রয়েছে। সাগাইং ও মাগওয়ার সীমান্ত শহরটিতে দুটি প্রতিরোধ গোষ্ঠী সক্রিয় রয়েছে। সেখানে বিদ্রোহীদের হামলায় সামরিক বাহিনীকে বেশ ক্ষয়ক্ষতির মধ্যে পড়তে হচ্ছে।
সামরিক বাহিনীর ঘনিষ্ঠ কেইলের এক বাসিন্দা বলেন, উচ্চ-পদস্থ সামরিক কর্মকর্তাদের ৩০টি পরিবারকে রোববার রাতে হেলিকপ্টারে করে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
সংবাদ সূত্রঃ রেডিও ফ্রি এশিয়া