মুসলিম বিশ্ব পেল আরও এক নারী প্রধানমন্ত্রী

নাজলা বৌদেন রমদানে নামের স্বল্প-পরিচিত এক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশলীকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন তিউনিশিয়ার প্রেসিডেন্ট। নির্বাহী ক্ষমতা গ্রহণ করে সরকারকে বরখাস্ত ও পার্লামেন্ট স্থগিত করার প্রায় দুমাস পর বুধবার (২৯ সেপ্টেম্বর) তিউনিশিয়ার প্রেসিডেন্ট দেশটির ইতিহাসে প্রথম কোনো নারীকে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব দিলেন।

বিশ্ব ব্যাংকের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা থাকা এই নারী এমন এক সময় প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নিতে যাচ্ছেন, যখন আফ্রিকান দেশটিতে ২০১১ সালে গণতন্ত্র আসার পর ব্যাপক সংকট চলছে। কিন্তু সরকার পরিচালনায় তার অভিজ্ঞতা নেই বললেই চলে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে বিশ্বব্যাংকের বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্ব পালন করেছেন এই ভূতাত্ত্বিক প্রকৌশলী। কিন্তু সরকার পরিচালনায় তার অভিজ্ঞতা একেবারেই কম।

অনলাইনে প্রকাশ করা এক ভিডিওতে কায়েস সাঈদ বলেন, এই সিদ্ধান্তের মধ্য দিয়ে তিউনিশিয়ার নারীদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা হয়েছে। আগামী কয়েকদিন বা কয়েক ঘণ্টার মধ্যে পরবর্তী মন্ত্রিসভা ঘোষণার প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি। কারণ ইতিমধ্যে অনেক সময় নষ্ট হয়ে গেছে।

স্বাস্থ্য, পরিবহন ও শিক্ষাসহ সবক্ষেত্রের তিউনিশিয়ার সব নাগরিকের চাহিদা ও মর্যাদা বাস্তবায়নে নতুন সরকারের কাজ করা উচিত বলে মনে করেন তিনি। এর আগের প্রধানমন্ত্রীকে বরখাস্ত করে গত জুলাইয়ে ব্যাপক নির্বাহী ক্ষমতাগ্রহণ করেছেন কায়েস সাঈদ। এরপর থেকে নতুন সরকার গঠনে অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক চাপে রয়েছেন তিনি।

গত সপ্তাহে দেশের সংবিধানের অধিকাংশ ধারা অংশ স্থগিত করার গোষণা দিয়েছেন তিউনিশিয়ার প্রেসিডেন্ট। তিনি বলেন, ডিক্রি জারির মাধ্যমে দেশ শাসন করা হবে। আর জরুরি অবস্থায় সরকারের নিয়ন্ত্রণও তার হাতে থাকবে। তবে কবে এই জরুরি অবস্থার শেষ হবে; তা নিয়ে কোনো কথা বলতে দেখা যায়নি তাকে।

মহামারি ও অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক লড়াইয়ে তিউনিশিয়ার অর্থনীতিতে অচলাবস্থা চলছে। সেখানকার সরকারি ঋণপত্র মারাত্মক চাপের মধ্যে আছে। নতুন সরকারকে বাজেটে দ্রুতই অর্থনৈতিক সহায়তার জন্য হাত পাততে হবে। কায়েস সাঈদের অভ্যুত্থানের পর আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের সঙ্গে আলোচনা স্থগিত রাখা হয়েছে।

গেল সপ্তাহে তিনি জানান, সরকারকে প্রেসিডেন্টের কাছে জবাবদিহি করতে হবে। মন্ত্রিসভার সদস্যদের তিনি নিয়োগ কিংবা বরখাস্ত করার ক্ষমতাও হাতে নিয়েছেন। এতে আগের প্রশাসনের চেয়ে নতুন প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা গুরুত্বহীন হয়ে পড়েছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকেরা।