কাবুলে হামিদ কারজাই বিমানবন্দরের বাইরে জোড়া বোমা হামলার পর বিস্ফোরণের শব্দে আবারও কেঁপে উঠলো পুরো এলাকা। গতকাল বৃহস্পতিবার (২৬ আগস্ট) বিমানবন্দরের বাইরে তৃতীয় বিমানবন্দরের বাইরে বিস্ফোরণের আওয়াজ শোনা যায়।
ব্রিটিশ গণমাধ্যম ডেইলি মেইলের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, তৃতীয় বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পেয়েছেন বিমানবন্দরের আশেপাশে অবস্থান করা গণমাধ্যমকর্মীরা। তবে এ সময় কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। এর আগে বিমানবন্দরের বাইরে জোড়া আত্মঘাতী বোমা হামলায় ১৩ মার্কিন সেনা ও শিশুসহ অন্তত ৯০ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও প্রায় ১৪০ জন।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম জানিয়েছে, দেশত্যাগের জন্য বিমানবন্দরের বাইরে অবস্থান করছিলেন আফগানরা। আফগানদেন কাবুল থেকে সরিয়ে নেওয়ার কাজ করছিলো ডেনমার্কসহ কয়েকটি দেশ। এর মধ্যেই বিমানবন্দরের অ্যাবে গেটের বাইরে একটি আত্মঘাতী বোমা হামলা হয়। এ সময় সেখানে প্রায় চার থেকে পাঁচশ মতান্তরে হাজার খানেক মানুষ ছিলেন। তারা সবাই আফগানিস্তান থেকে চলে যাওয়ার অপেক্ষায় ছিলেন। প্রথম বিস্ফোরণের পর দূর থেকে গুলি চালায় আরেক হামলাকারী। এর কিছুক্ষণ পরই পাশের ব্যারন হোটেলের বাইরে আরেকটি বিস্ফোরণ ঘটে।
বিভিন্ন গণমাধ্যমে বিস্ফোরণ পরবর্তী ভিডিওতে দেখা গেছে লাশের স্তূপ। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত চার মার্কিন সেনা ও শিশুসহ অন্তত ৬০ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। আহত হয়েছেন আরও প্রায় শতাধিক। তাদের অনেককে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঘটনাস্থলে থেকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। অনেককে ঘটনাস্থলেই প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। তবে ভিড়ের মধ্যে ঘটা বোমা হামলায় আহতের সংখ্যা বেশি হওয়ায় নিহতের সংখ্যা আরও বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় হাসপাতালগুলোর চিকিৎসকসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
এদিকে বিস্ফোরণের পর উদ্ধার অভিযান সাময়িক বন্ধ রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র ও ডেনমার্কসহ মিত্র দেশগুলো। বিমানবন্দরের সবগুলো গেটই বন্ধ রাখা হয়েছে। বিস্ফোরণের মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগেই আফগানিস্তানে ইসলামিক স্টেটের (আইএস) অনুসারী ইসলামিক স্টেট খোরাসান (আইএসআইএস-কে) আত্মঘাতী হামলা চালাতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা কয়েকটি দেশ। হামলার আশঙ্কায় বৃহস্পতিবার কাবুল বিমানবন্দর থেকে নাগরিকদের দূরে থাকার আহ্বান জানায় যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং অস্ট্রেলিয়া। আজকের হামলার পর তাই এর জন্য আইএসআইএস-কে দায়ী বলে ধারণা করছে দেশগুলো। তবে হামলার জন্য আসলে কে দায়ী তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
পেন্টাগনের প্রেস সেক্রেটারি জন কিরবি জানিয়েছেন, বিস্ফোরণ একটি নয়, দুইটি হয়েছে। একটি হয়েছে বিমানবন্দরের অ্যাবে গেটে। অন্যটি হয়েছে ব্যারন হোটেলে বা এর পাশেই। গেট থেকে সামান্য দূরেই অবস্থিত এই হোটেল। এদিকে রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, বিস্ফোরণে হতাহতদের মধ্যে বেশ কয়েকজন মার্কিন সেনা সদস্য ছিলেন। এমনকি নিহতদের মধ্যে অন্তত ১০ মার্কিন নাগরিক থাকার কথা বলছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো। তবে সে সম্পর্কে এখনো নিশ্চিত তথ্য পাওয়া যায়নি।