কাবুল থেকে যুক্তরাষ্ট্র আরও সহস্রাধিক মার্কিন সৈন্যকে দেশে ফিরিয়ে নিয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার (১৭ আগস্ট) ১৩টি সামরিক উড়োজাহাজে করে তাদের আফগানিস্তান থেকে নিজ দেশে ফিরিয়ে নেওয়া হয় বলে হোয়াইট হাউস জানিয়েছে।
আফগানিস্তান এখন তালেবানদের নিয়ন্ত্রণে। এর মধ্যেই অনেকটা তড়িঘড়ি করেই যুক্তরাষ্ট্র নিজ দেশের নাগরিকদের ফিরিয়ে নিচ্ছে। যদিও দেশটির প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আগেই ঘোষণা দেন, চলতি মাসের ৩১ তারিখের মধ্যে আফগানিস্তান থেকে সব মার্কিন সেনা ও নাগরিকদের ফিরিয়ে নেওয়া হবে।
এদিকে তালেবান আফগানিস্তানে কয়েকদিনের মধ্যে সরকার গঠনের আশা করছে। এই গোষ্ঠীটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে সুসম্পর্ক চায়। স্বীকৃতি আদায়ের চেষ্টাও চালাচ্ছে। এ বিষয়ে তারা বিভিন্ন দেশের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের জন্য কয়েকটি চ্যানেলকে কাজে লাগাচ্ছে। ইতোমধ্যে চীন, রাশিয়া, পাকিস্তান ও তুরস্ক স্বীকৃতি দেওয়ার প্রস্তুতি শুরু করেছে। যদিও ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন তালেবানকে স্বীকৃতি না দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। ভিন্ন প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
এর আগে গত ১৫ এপ্রিল প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এক বিবৃতিতে জানান, আফগানিস্তানে মার্কিন সেনাদের দীর্ঘদিনের যুদ্ধ-সংঘাতের অবসান চান তিনি। তিনি বলেন, আফগানিস্তান থেকে সব মার্কিন সেনাকে সরিয়ে নেওয়া হবে। তবে সব সেনাকে সরিয়ে নিলেও আফগানিস্তানকে সব ধরনের সমর্থন দিয়ে যাবেন বলে নিশ্চিত করেছেন তিনি। তবে দেশটিতে আর সামরিক সহায়তা দিতে চান না বলেও প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।
নাইন-ইলেভেনের পর ২০০১ সালে ওই স্থান থেকেই তালেবানদের উৎখাত করতে আফগানিস্তানে মার্কিন সেনা মোতায়েন এবং বিমান হামলার ঘোষণা দেওয়া হয়। আগামী ১১ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের টুইট টাওয়ারে সন্ত্রাসী হামলার ২০ বছর পূর্তি। ওই হামলাকে কেন্দ্র করেই তালেবানদের উৎখাত করতে আফগানিস্তানে প্রায় ২০ বছর ধরে মার্কিন সেনা মোতায়েন রয়েছে। ট্রিলিয়ন ট্রিলিয়ন ডলার খরচ করে, হাজার হাজার সেনার দেহ কফিনবন্দি করে, দেশের ইতিহাসের দীর্ঘতম যুদ্ধ শেষ করে খালি হাতেই আফগানিস্তান থেকে ফিরতে হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রকে। আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের ২০ বছরব্যাপী ‘সন্ত্রাসদমন’ যুদ্ধে দেশটির খরচ হয়েছে দুই লাখ ২৬ হাজার কোটি ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা ১ কোটি ৯০ লাখ কোটি টাকারও বেশি।