সামনে পড়ে আছে মেয়ের নিথর দেহ। কিন্তু অভিযুক্ত দেননি কাছে ঘেঁষতে। বরং কান্নাকাটি না করে বাড়ি গিয়ে ঘুমাতে বলেন মেয়ের মাকে। থানায় খবর দিতে চাইলে অভিযুক্তের জবাব ছিল, ‘ভিক্ষা করে খাও। থানা, পুলিশ, কোর্ট কাছারির খরচ চালাবে কী করে?’ দিল্লিতে ৯ বছরের দলিত মেয়েকে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় সাড়া পড়ে গেছে ভারতজুড়ে। বিক্ষোভে উত্তাল দিল্লি। এর মধ্যেই ওই রাতে শ্মশানে অভিযুক্তের সঙ্গে নিজের এমনই কথোপকথন সামনে আনলেন নিহত শিশুটির মা।
চতুর্থ দিনের মতো গতকাল বুধবারও দিল্লিতে শত শত মানুষ বিক্ষোভে অংশ নেন। নারী-পুরুষদের এই বিক্ষোভে দ্রুত ধর্ষণ বন্ধ করার আহ্বান জানানো হয়। যেখানে মেয়েটির দেহ দাহ করা হয়েছে সেখানেও হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভে অংশ নেন। তারা ধর্ষকদের ফাঁসি দাবি করেন। তারা স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তাদেরও বরখাস্তের দাবি করেন। পুলিশ উলটো মেয়েটির পরিবারকেই হেনস্থা করে বলে অভিযোগ আছে।
শ্মশানে বসানো ঠান্ডা পানির মেশিন থেকে রবিবার সন্ধ্যায় পানি আনতে গিয়েছিল মেয়েটি। কিন্তু তারপর অনেকটা সময় কেটে গেলেও বাড়ি ফেরেনি সে। সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ হঠাৎ স্থানীয়রা এসে তার মাকে জানায়, শ্মশানের পুরোহিত রাধেশ্যাম তাকে ডেকেছেন। সেখানে গিয়ে ওই মহিলা দেখেন, তার শিশুর দেহ পড়ে রয়েছে। বিদ্যুত্স্পৃষ্ট হয়ে মেয়ের মৃত্যু হয়েছে বলে তাকে জানান রাধেশ্যাম। কিন্তু তাকে মেয়ের দেহ ছুঁয়ে পর্যন্ত দেখতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ।
৯ বছরের শিশুটিকে ধর্ষণ এবং খুনের অভিযোগে রাধেশ্যাম (৫৫) এবং তার তিন সহযোগী, লক্ষ্মী নারায়ণ (৪৩), কুলদীপ (৬৩) এবং সেলিম (৪৯)আরও তিন জনকে ইতিমধ্যেই গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। দেহ পোড়ানোয় ময়নাতদন্তের রিপোর্টে তেমন কিছুই পাওয়া যায়নি।
তবে শিশুদের উপর যৌন নির্যাতন এবং তফসিলি জাতি ও উপজাতি অপরাধ আইনে মামলা দায়ের হয়েছে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে। তাদের লাই ডিটেকশন এবং মাদক পরীক্ষা করা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ। কিন্তু তাদের মেয়েকে ধর্ষণের পর খুনই করা হয়েছে বলে অভিযোগ শিশুটির পরিবারের।
সংবাদ সূত্রঃ আনন্দবাজার পত্রিকা ও বিবিসি