যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা তালেবানের বিরুদ্ধে প্রায় বিশ বছর যুদ্ধের পর আফগানিস্তান ছেড়ে যাচ্ছে। ওয়াশিংটন ৯/১১ হামলার বিশতম বার্ষিকীতে সেনা প্রত্যাহার সম্পূর্ণ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এই ৯/১১ হামলাকে অজুহাত করেই আফগানিস্তান দখল ও বৈশ্বিক সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধ শুরু হয়েছিল।
যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে যেসব সামরিক সরঞ্জাম ও অস্ত্র পেয়েছিল আফগানিস্তানের সেনাবাহিনী আফগান ন্যাশনাল আর্মি সেগুলো তালেবানের হস্তগত হচ্ছে আশঙ্কাজনক হারে। দেশটি ছেড়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো চলে যাওয়ার পর সরকারের পতনের আশঙ্কায় পুরো ব্যাটালিয়ন তালেবানের সঙ্গে লড়াই না করে রেখে পালাচ্ছে সবকিছু।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ওপেন সোর্স ইন্টেলিজেন্স তদন্তে এই তথ্য উঠে এসেছে। সংঘাতভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ওরিক্স আফগান সেনাবাহিনীর সরঞ্জাম নিয়ে এই অনুসন্ধান চালায়। মার্কিন সংবাদমাধ্যম ফোর্বসসহ গুরুত্বপূর্ণ মিডিয়া হাউস ওরিক্সের প্রতি আস্থা রাখে। তাদের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, সম্প্রতি ৭১৫টি হামবি ও হালকা ট্রাক তালেবানের হস্তগত হয়েছে। সঙ্গে আছে সাঁজোয়া যান ও ভারী গোলা ব্যবস্থা।
ওরিক্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আফগান সেনাবাহিনীর অন্তত দুটি ট্রাক, কয়েক ডজন মর্টার সিস্টেম ও অ্যান্টি-এয়ারক্রাফট গান, ১৭টি ১২২ এমএম ডি-৩০ হউটিজার, বুলডোজার, এক্সকেভেটর ও অন্যান্য সরঞ্জাম তালেবানের দখলে গেছে।
এই অনুসন্ধানের সমর্থনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ কয়েকটি ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ করা হয়েছে। এগুলোতে দেখা গেছে, আফগান বাহিনী গণহারে তালেবানের কাছে অস্ত্র, সরঞ্জাম ও সামরিক যান আত্মসমর্পণ করছে।
কয়েক বছর ধরে আফগানিস্তানের সেনা ও পুলিশ বাহিনীকে প্রশিক্ষণ ও সরঞ্জাম দিয়ে সহযোগিতা করতে বিলিয়ন ডলার ব্যয় করেছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটিকে তারা ২৫ হাজার হামবিজ, হাজারো যান ও সামরিক সরঞ্জাম দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এক প্রতিবেদনে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ফোর্বস সতর্ক করে বলেছে, জ্বালানির ব্যবস্থা করতে পারলে তালেবান এসব সামরিক যান বড় ধরনের ভ্রাম্যমাণ লড়াইয়ের বাহিনী তৈরি করতে পারবে।
২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে তালেবান ও যুক্তরাষ্ট্রের শান্তিচুক্তিতে আফগান সরকার অন্তর্ভুক্ত ছিল না। আফগান সরকারের সঙ্গে তালেবানের একটি চুক্তি দ্রুতই ভেস্তে যায়।
সংবাদ সূত্রঃ স্পুটনিক নিউজ