গোটা বিশ্ব জুড়ে আবারও তাণ্ডব চালাচ্ছে মহামারি করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ। ফলে করোনা প্রতিরোধের কঠিন দুর্গ ভুটানের রাজধানী শহর থিম্পুতে স্তব্ধ হয়ে গেল জনজীবন। গত বছর থেকে ভাইরাসবিরোধী অভূতপূর্ব ভূমিকা রেখেছে ‘ড্রাগনভূমি’। করেনায় মৃতের সংখ্যা মাত্র একজন।
ভুটান সরকারের বিজ্ঞপ্তি উদ্ধৃত করে স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমের খবর, সংক্রমণ আচমকা বাড়তে থাকায় শনিবার থেকেই সম্পূর্ণ লকডাউন শুরু হয় থিম্পু শহরে। এই ব্যবস্থা চলবে টানা ৭২ ঘণ্টা।
দেশটির জাতীয় সংবাদ সংস্থা বিবিএস জানিয়েছে, থিম্পুর একটি বিদ্যালয়ে নিয়ম মাফিক ব়্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট চলছিল। সেই পরীক্ষায় এক শিক্ষার্থীর শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। সঙ্গে সঙ্গে রাজধানী শহরকে টানা চারদিন লকডাউন করার সিদ্ধান্ত নেয় দেশটির সরকার।
রাজা জিগমে খেসার নামগিয়াল ওয়াংচুকের বিশেষ নির্দেশে প্রধানমন্ত্রী ডা. লোটে শেরিং লকডাউনের বিষয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী দেচেন ওয়াংমোর সঙ্গে আলোচনা করেন। এরপরই সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়।
করোনা মোকাবিলায় বিশ্ব থেকে প্রায় নিজেকে বিচ্ছিন্ন করে রেখেছে ভুটান। ভারত ও চীনের মধ্যবর্তী দেশটির করোনা মোকাবিলা এমনই যে চমকে গিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা-সহ তাবড় তাবড় দেশগুলো।
সম্প্রতি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নীতি নির্ধারক ওয়ার্ল্ড হেল্থ অ্যাসেম্বলি (ডব্লিউএইচএ)- তে ভুটান সভাপতি নির্বাচিত হয়েছে। করোনা মোকাবিলায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সদস্যভুক্ত দেশগুলোতে যে নিয়মে পরবর্তী কর্মসূচি চলবে তা স্থির হবে ওয়ার্ল্ড হেল্থ অ্যাসেম্বলিতে। ভুটানের করোনা মোকাবিলা এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমের খবর, গণস্বাস্থ্য কর্মসূচির বহুল প্রয়োগ ঘটিয়ে করোনাকে যতটা সম্ভব ঠেকিয়ে রাখতে পারছে ছোট্ট এই দেশটি।
ভুটান প্রথম থেকেই করোনা মোকাবিলায় চূড়ান্ত বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি ব্যবহার করে। শুরু হয় গণস্বাস্থ্য কর্মসূচি ও গণহারে জীবাণুনাশক প্রয়োগ। খোদ প্রধানমন্ত্রী রাস্তায় নেমে স্যানিটাইজার বিলি করেন। সেই ছবি দেখে চমকে গিয়েছিল দুনিয়া। পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে বাণিজ্য ও যোগাযোগের অন্যতম ফুন্টশোলিং শহরের ভুটান গেট বন্ধ রাখা হয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ার অতি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যকেন্দ্র এখনই সম্পূর্ণ খুলবে না বলেই জানিয়েছে ভুটান।