ডেমোক্র্যাটিক পার্টি এখনও ইসরাইলকে সমর্থন দিলেও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন মনে করেন ফিলিস্তিনিদের জন্য আলাদা রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা ছাড়া দুই জনগোষ্ঠীর মধ্যে সংঘাতের অবসান সম্ভব নয়। ওয়াশিংটন সফররত দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে-ইনের সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন।
জো বাইডেন বলেন, তিনি প্রার্থনা করছেন ইসরাইলিদের ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি যাতে অব্যাহত থাকে। ‘দুই পক্ষের মধ্যে সংঘাতের একমাত্র সমাধান দুটি আলাদা রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা।’ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজার পুনর্গঠনে অন্য দেশের সঙ্গে মিলে বড় ধরনের সহায়তা প্যাকেজের প্রতিশ্রুতি দেন। ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে টানা ১১ দিনের সংঘাতের পর শুক্রবার থেকে চলছে যুদ্ধবিরতি, যার পেছনে কুশীলব হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র ভূমিকা রেখেছে বলে রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে।
বাইডেন বলেন, হামাস যাতে অস্ত্রের মজুদ না গড়তে পারে তা নিশ্চিত করতে ইসরাইলি দখলে থাকা ওয়েস্ট ব্যাংকে তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্যালেস্টাইনিয়ান অথরিটির সঙ্গে সমন্বয় করে ওই অঞ্চলে সহায়তা দেওয়া হবে। ‘একটা বিষয় স্পষ্ট করা দরকার: একটি স্বাধীন ইহুদি রাষ্ট্র হিসেবে ইসরাইলের অস্তিত্ব যতদিন না ওই অঞ্চলের স্বীকৃতি পাবে, ততদিন কোনো শান্তি আসবে না।’
গত ১০ মে হামাসের রকেট হামলার জবাবে সামরিক অভিযান শুরুর কথা জানায় ইসরাইল; বিমান হামলার পাশাপাশি গাজা সীমান্তে কামান-ট্যাংক থেকেও গোলা বর্ষণ চলতে থাকে। এতে নারী ও শিশুসহ প্রায় আড়াইশ ফিলিস্তিনি নিহত হয় বলে বিবিসি জানিয়েছে। অন্যদিকে হামাসের রকেট হামলায় ১২ ইসরাইলি নিহত হওয়ার খবরও এসেছে।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আহ্বান উপেক্ষা করেই সংঘাত চলছিল। ইসরাইলের পক্ষ থেকে হামলা বন্ধ না করার কথাই বলা হচ্ছিল। পরে যুদ্ধ বন্ধের উদ্যোগ নিয়ে আসা প্রতিবেশী দেশ মিশরের প্রস্তাবে দুই পক্ষ শুক্রবার থেকে যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়।
ইসরাইলি-ফিলিস্তিনিদের মধ্যে সংঘাত বন্ধে আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক মহল দীর্ঘ দিন ধরে জেরুজালেমকে রাজধানী হিসেবে ভাগাভাগি করে ইসরাইলের পাশাপাশি ফিলিস্তিনিদের জন্য আলাদা রাষ্ট্রের ধারণাকে সামনে রেখে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ফিলিস্তিনিদের উপেক্ষা করে অন্ধভাবে ইসরাইলকে সমর্থন করায় এর আগে ডনাল্ড ট্রাম্পের অধীনে যুক্তরাষ্ট্রের নীতি সমালোচিত হয়েছে।
তার প্রশাসনও দুই রাষ্ট্র সমাধান নিয়ে হাজির হয়েছিল। কিন্তু তাতে ‘ইসরাইলকে নিরাপত্তার দায়িত্ব দিয়ে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে সীমিত সার্বভৌমত্ব দেওয়ার’ প্রস্তাব থাকায় তা প্রত্যাখ্যাত হয়। তবে শুক্রবার বাইডেন যে কথা বলেছেন, তাতে সেই অবস্থান থেকে সরে গিয়ে ফিলিস্তিনিদের জন্য পূর্ণাঙ্গ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠারই ইঙ্গিত ছিল।
সংবাদ সূত্রঃ রয়টার্স