চীনের আধিপত্য প্রবল আকারে বেড়ে চলছে নেপালে। অপরদিকে, নেপালে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ভারতবিরোধী মনোভাব। এ অবস্থায় কাঠমান্ডুকে কীভাবে কাছে আনা যায়, তার কৌশল নিয়ে এখন মহা ব্যস্ত ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আগামী মাসে একটি জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের উদ্বোধন করতে নেপাল যাওয়ার কথা রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সেই সফরকে রাজনৈতিকভাবে সফল করে তুলতে উঠেপড়ে লেগেছে ভারত।
আনন্দবাজার পত্রিকার একটি প্রতিবেদনে এমন কথায় বলা হয়েছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের রক্তচাপ বাড়ার অন্যতম কারণ সম্প্রতিকালে সেদেশের তিনটি কমিউনিস্ট দল (ইউএমএল, মাওবাদী, নয়াশক্তি) এবারই প্রথম একসঙ্গে জোট বেঁধে ভোটে নামছে। নভেম্বরে সেদেশে নির্বাচন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রের খবর, কেপি ওলি, প্রচ- এবং বাবুরাম ভট্টরাইয়ের নেতৃত্বাধীন দল তিনটিকে একসূত্রে গাঁথার কাজটি আসলে করছে চীন। ভারত-বন্ধু হিসেবে পরিচিত নেপালি কংগ্রেস এর ফলে নেপালে জমি হারাবে বলেই মনে করা হচ্ছে।
ইউএমএল নেতা কেপি ওলি নেপালের প্রধানমন্ত্রী থাকার সময়েই নয়াদিল্লির সঙ্গে কাঠমান্ডুর সম্পর্ক সবচেয়ে খারাপ হয়েছে। নেপালের সংবিধান পরিষদ নতুন সংবিধান প্রণয়নের পরই শুরু হয়েছে প্রবল বিতর্ক এবং বিক্ষোভ। ভারতীয় বংশোদ্ভূত মদেশীয় এবং তারু সম্প্রদায়ের বিক্ষোভের পেছনে নয়াদিল্লির হাত রয়েছে বলে প্রকাশ্যেই প্রচার করেছে ওলি সরকার। প্রচ-ের সঙ্গেও সাউথ ব্লকের সম্পর্কে তিক্ততা এসেছে।
প্রচণ্ড বরাবরই চীনের হাতে তামাক খেয়েছেন- এমন তথ্য ভারতের কাছে রয়েছে। প্রচণ্ডের সঙ্গে এ মুহূর্তে বেইজিংয়ের যোগাযোগ কতটা গভীর, সেদিকে গোপনে নজর রাখছে দিল্লি। আনন্দবাজার পত্রিকা জানায়, গত এক বছর ধরেই নেপালে চীনের প্রভাববৃদ্ধি নিয়ে আশঙ্কা বেড়েছে সাউথ ব্লকের। দু’দেশের মধ্যে যৌথ সামরিক মহড়া, ‘ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোড’ প্রকল্পে চীন-নেপাল সহযোগিতা, দরপত্র না ডেকেই চীনা সংস্থাকে নেপালের জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের কার্যাদেশ দেয়ায় ক্ষুব্ধ হয় দিল্লি।
ডোকলাম সংকটের সময় নেপালি রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে নয়াদিল্লিতে নিযুক্ত চীনের অন্যতম শীর্ষ কূটনীতিক বৈঠক করেছিলেন। চীন কাঠমান্ডুকে ক্রমাগত বুঝিয়ে চলেছে, ভারত অন্য দেশের সার্বভৌমত্বে নাক গলাচ্ছে।
পরিস্থিতির যাতে আরও অবনতি না হয় সেজন্য দিল্লির সর্বাত্মক চেষ্টা চালু রয়েছে বেশকিছুদিন ধরেই। সুষমা স্বরাজ ‘বিমসটেক’ দেশগুলোর বিদেশমন্ত্রী সম্মেলনে যোগ দিতে কাঠমান্ডু গিয়ে নেপালকে পরিকাঠামো ক্ষেত্রে বড় রকম সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে এসেছিলেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তার কথায়, এলপিজি সরবরাহ, পরিকাঠামো, শিল্প এবং বাণিজ্য, জলবিদ্যুৎ ক্ষেত্রে দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানো হবে।
মেচি নদীর ওপর সেতু তৈরির বিষয়ে সমঝোতা স্মারক সই হবে। প্রধানমন্ত্রীর আসন্ন কাঠমান্ডু সফরে ভারত নেপালের জন্য একগুচ্ছ উপহারের কথা ভাবছে।
বাংলাদেশ সময়: ১২১০ ঘণ্টা, ১৯ অক্টোবর ২০১৭
লেটেস্টবিডিনিউজ.কম/এসডিএম