ইসরাইলি হামলার প্রতিশোধ হিসেবে দেশটির রাজধানী তেলআবিবসহ বিভিন্ন এলাকায় ফিলিস্তিনিরা দুই হাজারের বেশি রকেট ছুড়েছে। এরই মধ্যে রোববার (১৬ মে) পর্যন্ত ১০ জন ইসরাইলি নাগরিক নিহত এবং অনেক স্থাপনা ধ্বংস হয়েছে। তবে দুই হাজারের মতো রকেট যদি ইসরাইলে পড়তো তাহলে ধ্বংসযজ্ঞের পরিমাণ আরও বেশি হতো। কিন্তু এই নিশ্চিত ধ্বংসের হাত থেকে ইসরাইলকে রক্ষা করছে এক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা। তার নাম ‘আয়রন ডোম’।
সামরিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হামাসের রকেটের সক্ষমতা আগের তুলনায় অনেক বেশি। তারা এবার ঝাঁকে ঝাঁকে রকেট পাঠাচ্ছে ইসরাইলের অভ্যন্তরে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ২০১৪ সালের পর এত বড় যুদ্ধ এই প্রথম দেখছে ইসরাইল। এই মুহূর্তে ইসরাইলের সবচেয়ে আলোচিত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আয়রন ডোম ঝাঁকে ঝাঁকে উড়ে আসা রকেট ঠেকাতে সক্ষম হচ্ছে। ফ্রান্সের রাফাল অ্যাডভান্সড ডিফেন্স সিস্টেমস এবং ইসরাইল এরোস্পেস ইন্ডাস্ট্রিজের যৌথ উদ্যোগে তৈরি করা হয় এই আয়রন ডোম।
২০১১ সালের ২৭ মার্চ ইসরাইলের সেনাবাহিনীকে দিয়ে প্রথম এই আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা বসানো হয়। তারও এক মাস পরে এই যন্ত্র কাজে লাগে ইসরাইলের। ওই বছর ৭ এপ্রিল ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ যোদ্ধাদের ছোঁড়া একটি ক্ষেপণাস্ত্রকে শনাক্ত করে আকাশেই ধ্বংস করে দেয়। কাজ শুরু করার মাত্র ৩ বছরের মধ্যে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ যোদ্ধাদের ছোঁড়া অন্তত ১২০০ রকেট ধ্বংস করে দেয় এই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। সেই সময় ইসরাইলের সামরিক বিশেষজ্ঞরা বলেছিলেন- এই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কার্যকর না থাকলে হাজার হাজার ইসরাইলি নাগরিকের মৃত্যু হতে পারতো সে সময়।
ইসরাইলের সামরিক বিশেষজ্ঞদের মতে, আয়রন ডোমের ৯০ শতাংশ লক্ষ্য নির্ভুল। আয়রন ডোম তার আশেপাশে নূন্যতম ৪ কিলোমিটার থেকে সর্বোচ্চ ৭০ কিলোমিটার দূরত্ব থেকে ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র শনাক্ত করতে পারে। ইসরাইলের প্রতিরক্ষা বাহিনী তাদের এই ক্ষমতা আরও বাড়ানোর চেষ্টা করে যাচ্ছে। ৭০ কিলোমিটার থেকে বাড়িয়ে সর্বোচ্চ সীমা ২৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত আয়রন ডোম এর সক্ষমতা বাড়ানো হচ্ছে।
ইসরাইলের সামরিক বিশেষজ্ঞদের দাবি, দিনে, রাতে এবং সব আবহাওয়াতেই একইভাবে কাজ করে আয়রন ডোম। এদিকে ইসরাইলের পরে যুক্তরাষ্টও এই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তুলেছে। মার্কিন ‘আয়রন ডোম’-এর নাম স্কাই হান্টার।
এদিকে এবারের লড়াই নিয়ে ইসরাইল সেনাবাহিনী বলছে, শনিবার (১৫ মে) রাত থেকে হামাস ইসরাইলের অভ্যন্তরে দুই হাজার রকেট হামলা চালিয়েছে। ইসরাইলের দাবি, এসব হামলার ৮০ শতাংশই প্রতিহত করেছে আয়রন ডোম। বাকি তিন শতাধিক রকেট বিভিন্ন স্থাপনা ও স্থানে হামলা চালিয়েছে।
