বিল গেটস ও তার স্ত্রী মেলিন্ডা গেটসের বিচ্ছেদের ঘোষণার পর আলোচনায় উঠে আসছেন তাদের সন্তানরা। ধনকুবের এ দম্পতির ছেলে–মেয়ে তিনজন। মা-বাবা অঢেল সম্পদের মালিক হলেও তার খুব সামান্যই সন্তানেরা পাচ্ছেন।
পেশা ভিত্তিক ছিল বিল গেটস ও মেলিন্ডার সম্পর্কের শুরুটা। প্রোডাক্ট ম্যানেজার হিসেবে ১৯৮৭ সালে মাইক্রোসফটে যোগ দিয়েছিলেন মেলিন্ডা। এরপর প্রায় সাত বছরের প্রেমের সম্পর্ক বিয়েতে গড়ায় ১৯৯৪ সালে। তাদের সংসারে আসে একে একে তিন সন্তান। এ দম্পতির বিচ্ছেদের ঘোষণার পর থেকেই কী পরিমাণ সম্পদের মালিক হচ্ছেন তাদের সন্তানরা তা নিয়ে শুরু হয়েছে আলোচনা।
ফোর্বস সাময়িকীর তথ্যমতে, বিশ্বের ধনী ব্যক্তিদের তালিকায় চতুর্থ অবস্থানে আছেন বিল গেটস। তাঁর সম্পদের পরিমাণ ১২৪ বিলিয়ন ডলার। সত্তরের দশকে সহপ্রতিষ্ঠাতা হিসেবে বিশ্বের সর্ববৃহৎ সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন বিল গেটস। এই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে এ সম্পদের মালিক হন তিনি। বিল গেটস ও মেলিন্ডা দম্পতির বিচ্ছেদের ঘোষণার পর থেকেই তাদের সন্তানরা কী পরিমাণ সম্পদের মালিক হচ্ছেন, তা নিয়ে শুরু হয় আলোচনা।
কিন্তু এত বিপুল সংখ্যক অর্থ সম্পদের মালিক হলেও সন্তানরা সে তুলনায় নিজেদের ভাগে পাচ্ছেন নামে মাত্রই। জানা গেছে, তিন ভাই–বোনের প্রত্যেকেই পাবেন এক কোটি ডলার করে। বিল ও মেলিন্ডার বাকি অর্থ চলে যাবে ট্রাস্টে। ছেলেমেয়েদের সবাই এগিয়ে চলেছেন নিজেদের স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্য নিয়ে। ধনকুবেরের সন্তান হয়েও বাবা-মায়ের সম্পদের চেয়ে নিজেদের পরিচয় গড়ে তোলার প্রতিই মনযোগী তারা।
গেটস দম্পতির বড় মেয়ে জেনিফার গেটসের বয়স এখন ২৪ বছর। পড়াশোনা করেছেন ওয়াশিংটনের সিয়াটলের লেকসাইড হাইস্কুলে। এরপর ভর্তি হন স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটিতে। পড়েছেন হিউম্যান বায়োলজিতে। জেনিফার ইতিমধ্যে নিজের ক্যারিয়ারের পথে হাঁটতে শুরু করেছেন। ধনকুবেরের মেয়ে হলেও অনেক সুবিধা যে পেয়েছেন তা নয়। বয়স ১৪ বছর হওয়ার আগ পর্যন্ত তাঁর হাতে ফোন তুলে দেওয়া হয়নি। দক্ষ অশ্বারোহী এই মেয়ে বলেছেন, গেটস ও মেলিন্ডা দম্পতির বড় মেয়ে হওয়া সৌভাগ্যের বিষয়। জেনিফার ২০১৮ সালে স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটি থেকে স্নাতক পাস করেন। এরপর তিনি নিউইয়র্কের মাউন্ট সিনাইয়ের ইকাহন স্কুল অব মেডিসিনে ভর্তি হয়েছিলেন। বিভিন্ন দাতব্যকাজেও সংশ্লিষ্ট আছেন জেনিফার গেটস।
ছেলে রোরির জন্ম ১৯৯৯ সালে। জেনিফারের মতো তিনিও পড়াশোনা করেছেন ওয়াশিংটনের সিয়াটলের লেকসাইড হাইস্কুলে। এরপর ভর্তি হন ইউনিভার্সিটি অব শিকাগোয়। নারী পুরুষের সমতা নিয়ে কাজের ব্যাপারে আগ্রহী ছেলে রোরি। তবে তার ব্যক্তিগত পরিকল্পনা সম্পর্কে জানা যায়নি তেমন কিছুই। কেননা সব সময় গণমাধ্যম এড়িয়ে চলার চেষ্টা করেছেন তিনি।
এদিকে, ছোট মেয়ে ফিবি অ্যাডেল গেটসের বয়স ১৮ বছর পূর্ণ হয়েছে সম্প্রতি। পড়াশোনা করেছেন নিউইয়র্কের প্রফেশনাল চিলড্রেন স্কুলে। ব্যালে নাচের প্রতি বেশ আগ্রহ তাঁর। ফলে পড়াশোনা করেছেন নিউইয়র্কের দ্য স্কুল অব আমেরিকান ব্যালেতে। পড়েছেন দ্য জুলিয়ার্ড স্কুলে। এ ছাড়া দাতব্য কাজের প্রতি আগ্রহ রয়েছে তাঁরও।
এদিকে, বিশ্লেষকদের অনেকেই বিল গেটস ও মেলিন্ডার বিচ্ছেদকে ইতিহাসের সবচেয়ে ব্যায়বহুল বিচ্ছেদ বলে অভিহিত করছেন।