তৃতীয়বারের মতো আগামীকাল বুধবার (০৫ মে) ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিতে যাচ্ছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার আগে সোমবার কালীঘাটের বাড়ির সাংবাদিক বৈঠক থেকে ‘দলত্যাগী’দের জন্য বিশেষ বার্তা দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূল নেত্রীর স্পষ্ট কথা, “আসতে চাইলে আসতেই পারেন তারা।” কার্যত তৃণমূলের পক্ষ থেকে যে দল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়া নেতা-মন্ত্রীদের ‘ঘরে ফেরা’তে কোনও বাধাই নেই সেই বার্তাই দিলেন মমতা।
ভোটের আগে শাসকদল ছেড়ে গেরুয়া শিবিরের পতাকা তুলে নিয়েছিলেন একদল তৃণমূলী। তাদের কেউ ছিলেন বিধায়ক, কেউ মন্ত্রী কেউ বা গুরুত্বপূর্ণ নেতা। সবারই মূলত দাবি ও অভিযোগ ছিল “দলে থেকে কাজ করতে পারছিলাম না”।
আর তাতেই নাকি এই রং-বদল। তবে রাজনৈতিক রং পাল্টেও শেষমেশ ভোটবাক্সে লাভের মুখ দেখতে পারেননি বহু দলত্যাগী। এমন নেতা-নেত্রীদের তালিকা সংক্ষিপ্ত হলেও ধারে ও ভারে তারা হেভিওয়েট। সব্যসাচী দত্ত, জিতেন তিওয়ারি, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, বৈশাখী ডালমিয়া বা প্রবীর ঘোষালের মতো সেই হেভিওয়েটদের পক্ষেই আম জনতার রায় পড়েনি। জনতার মন জিততে ব্যর্থ হয়েছেন একদা তৃণমূল ঘনিষ্ঠ, সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা রুদ্রনীলও।
নতুন দলে পা রাখার সঙ্গে সঙ্গেই বিধানসভার টিকিট হাতে পেয়েছিলেন রাজীব-জিতেনরা। তবে সাধারণ মানুষের মন জয় করতে ব্যর্থ তারা। ডোমজুড় আসনে নিজের পুরনো দলের প্রার্থী কল্যাণেন্দু ঘোষের কাছে হেরেছেন রাজীব। পাণ্ডবেশ্বরের বিদায়ী বিধায়ক জিতেন তিওয়ারি খুইয়েছেন নিজের আসন। উত্তরপাড়ায় প্রবীর ঘোষালের হার হয়েছে তৃণমূলের তারকা প্রার্থী কাঞ্চন মল্লিকের কাছে। তৃণমূলের রানা চট্টোপাধ্যায়ের কাছে বালির আসন ছাড়তে হয়েছে বৈশাখী ডালমিয়াকে।
অথচ সদ্য দলে যোগ দেওয়া এই নেতা-নেত্রীদের জেতাতে প্রচারে দেখা গিয়েছে বিজেপির কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানিকে। ভোটপ্রচারে পশ্চিমবাংলায় পা রেখেছেন খোদ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের মতো গেরুয়া শিবিরের হেভিওয়েটরা। তবে এই দলত্যাগীদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন আম-জনতা। ভোটবাক্সে তারই প্রতিফলন দেখা গিয়েছে।
এবার কী তবে নেত্রীর পরোক্ষ আহ্বানে গুটি গুটি পায়ে ঘরে ফিরবেন সেই দলবদলুরা? তৃণমূলের বিপুল জয়ের সরনি বেয়ে এই প্রশ্নই উঠছে।