বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বাধিক জনবহুল এবং পৃথিবীর বৃহত্তম গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনে টানা তৃতীয়বারের মতো বিজয় অর্জন করলেন সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতিষ্ঠাতা-সভানেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নির্বাচনে দলীয় প্রচারে বিজেপির রথী-মহারথীদের বিরুদ্ধে ফুফু (পিসি) মমতার সঙ্গে হাত হাত রেখে লড়াই করেছেন ভাতিজা (ভাইপো) অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রার্থী না হয়েও তৃণমূল নেত্রীর সঙ্গী হয়ে দলের জন্য বিপুল ‘জয়’ ছিনিয়ে আনলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গ দখলে নিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ প্রচারে নেমেছিলেন বাঘা বাঘা নেতা। সঙ্গে ছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ, তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যাওয়া শুভেন্দু অধিকারী ও তার অনুসারাীরা। উল্টো দিকে ছিলেন মমতা ও অভিষেক।
তবে ভোটের প্রচারে অভিষেককে কাবু করতে তার ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তোলেন। প্রতিটি প্রচারণা সভায় বিজেপি নেতাদের মুখে মুখে ছিল অভিষেক ও তার স্ত্রী। ভোট প্রচারণাকালেই অভিষেকের স্ত্রী রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কয়লা দুর্নীতির একটি নোটিশ পাঠায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা (সিবিআই)। বিষয়টি বিজেপি নেতাদের হাতে যেন আরও শক্তিশালী অস্ত্র তুলে দেয়।
কিন্তু একের পর এক ‘চাপ’ সহ্য করে ঠান্ডা মাথায় ‘খেলা’ চালিয়ে গিয়েছেন ডায়মন্ড হারবারের তৃণমূল সাংসদ। যার ফল মিলেছে হাতেনাতে। অভিষেকের গড় দক্ষিণ ২৪ পরগনার ৩১টি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে কেবল ভাঙড় জয় করেছেন সংযুক্ত মোর্চা সমর্থিত ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট (আইএসএফ)-এর নওশাদ সিদ্দিকি। বাকি ৩০টি আসনই পেয়েছে তৃণমূল।
বিজেপি যেখানে একের পর এক তারকাকে প্রচারণায় নামিয়েছে, সেখানে তৃণমূলের প্রচারের নেতৃত্ব দিয়েছেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক। প্রকৃতপক্ষে তারাই ছিলেন দলের তারকা প্রচারক। মমতার মতোই রাজ্যের এক প্রান্ত থেকে ওপর প্রান্তে ছুটে বেড়িয়েছেন অভিষেক। ফুফু আর ভাতিজার এই কৌশল যে বিজেপি কুপোকাত করেছে, ভোটের ফলই তার প্রমাণ।