জাভেদের কড়া সমালোচনায় ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনি

নজিরবিহীনভাবে পশ্চিম এশিয়ার রাষ্ট্র ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভেদ জারিফের কড়া সমালোচনা করেছেন দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনি। সম্প্রতি ফাঁস হওয়া একটি সাক্ষাৎকারের বিষয়ে জারিফকে তিরস্কার করেছেন খামেনি।

এক টেলিভিশন ভাষণে খামেনি বলেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী জারিফের বক্তব্য শুনে বিস্মিত ও হতাশ হয়েছি। জারিফ যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা যুক্তরাষ্ট্রের বক্তব্যের অনুরূপ বলেও মন্তব্য করেন খামেনি।

সম্প্রতি ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভেদ জারিফের একটি গোপন সাক্ষাৎকারের অডিও প্রকাশ পায়। যেখানে তিনি দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওপর প্রভাবশালী কুদস ফোর্সের (ইরানের রেভ্যুলুশনারি গার্ডের এলিট ফোর্স ‘কুদস ফোর্সের’) সরাসরি হস্তক্ষেপের সমালোচনা করেন।

সর্বোচ্চ নেতার এবং কুদস ফোর্সের সঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এ বিরোধ আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে মত বিশেষজ্ঞদের।

এর আগে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম বিবিসি জানায়, ২৮ এপ্রিল ফাঁস হওয়া একটি অডিও রেকর্ডে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভেদ জারিফকে হতাশা প্রকাশ করে বলতে শোনা গেছে যে, ইরানের পররাষ্ট্রনীতির ওপর প্রভাব বিস্তার করে দেশটির রেভল্যুশনারি গার্ডস বা বিপ্লবী রক্ষী বাহিনী এবং রাশিয়ার নির্দেশে এ বাহিনীই ইরানকে সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে জড়িয়েছে। সামাজিক মাধ্যমে এ বক্তব্য ব্যাপক বিস্ময়ের সৃষ্টি করেছে।

তার এ বক্তব্য থেকে যেটা প্রকাশ পেয়েছে, সেটা অনেক ইরানিই অনেক দিন ধরে সন্দেহ করছিলেন। সবচেয়ে বিস্ময়ের বিষয় হলো এ মন্তব্য এসেছে খোদ জারিফের মুখ থেকে, যিনি একজন অভিজ্ঞ কূটনীতিক, সাধারণত খুবই সতর্কতার সঙ্গে তিনি কথা বলেন এবং ইরানের রাজনীতিতে তিনি একজন মধ্যপন্থি বলে বিবেচিত।

এ ভিডিও টেপ কে ফাঁস করেছে তা স্পষ্ট নয়। তবে এটা ঘটেছে যখন ইরানে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রস্তুতি চলছে এবং অভ্যন্তরীণ ক্ষমতার লড়াই একটা নতুন মাত্রা নিয়েছে।

জারিফ বলেছেন, তিনি প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানির উত্তরসূরি হওয়ার লড়াইয়ে নামছেন না। কিন্তু কট্টরপন্থীরা তাকে বিশ্বাস করেন না এবং তার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সবরকম পথ তারা বন্ধ করে দিতে চান।

যেটা স্পষ্ট সেটা হলো ফাঁস হওয়া এই রেকর্ড চরম বিপাকে ফেলবে ইরানের এ শীর্ষ কূটনীতিককে, বিশেষ করে কট্টরপন্থিদের এবং সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির সঙ্গে তার সম্পর্ক বড় ধরনের হুমকির মুখে পড়বে। দেশটির সবরকম সরকারি কর্মকাণ্ডে শেষ কথা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির, তিনিই দেশটির সবচেয়ে ক্ষমতাশালী নিরাপত্তা বাহিনী রেভল্যুশনারি গার্ডসকে নিয়ন্ত্রণ করেন।