পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনের ভোটগণনা শুরু হয়েছে। কয়েক ঘণ্টার মধ্যে জানা যাবে, পশ্চিমবাংলার মসনদে বসছেন কে। আজ রোববার সকাল থেকে শুরু হয় এ ভোট গণনা। ২০১১ সালে তৃণমূল কংগ্রেসের নেত্রী মমতা ব্যাণার্জী পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় শাসন কায়েম করেছিলেন।
৮ দফায় অনুষ্ঠিত এই ভোট নিয়ে এবার বেশ আলোচনা ছিল সমগ্র ভারতজুড়ে। পশ্চিমবঙ্গে বিগত বছরগুলোতে পদ্ম ফোঁটেনি। এবার সে সুযোগ করেছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। পিছিয়ে থাকেন নি মমতাও। খোঁড়া পা নিয়ে বেশ দৌঁড়েছেন। এ দৌঁড়ের মূল ফল কী, পরে জানা যাবে। তবে, তার আগে জরিপ বলছে, ভারী ভোটে জিতবেন দিদি। বিজেপিও অবশ্য, খুব বেশি পিছিয়ে নেই।
২০১১ সালের পর ২০১৬ সালে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনেও বিশায় জয় পেয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস। তবে, ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের ফলপ্রকাশ বুঝিয়ে দেয়, পশ্চিমবঙ্গের একটা বড় অংশের মানুষ বিজেপির দিকে ঝুঁকেছে।
গত ২৭ মার্চ থেকে ২৯ এপ্রিল পর্যন্ত এই রাজ্যে ৮ দফায় বিধানসভার ২৯২টি আসনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেই নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার জন্য রাজ্যের ২৩টি জেলায় ১০৮টি গণনাকেন্দ্রে ভোট গণনা করা হবে। আনন্দবাজার পত্রিকা বলছে, করোনাভাইরাস সংক্রমণ থেকে বাঁচতে ভোট গণনাকেন্দ্রে সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে বেশ ভালোভাবেই। গণনাকেন্দ্রের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। ২০১৬ সালে যেখানে ৯০টি গণনাকেন্দ্র ছিল, এবার তা বাড়িয়ে করা হয়েছে ১০৮টি। ১০০ মিটার এলাকা জুড়ে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।
নির্বাচন কমিশনের অনুমতি ছাড়া গণনাকেন্দ্রে ঢোকার অনুমতি নেই রাজ্য পুলিশেরও। ভোট গণনা শেষ হলে রিটার্নিং অফিসার, গণনা পর্যবেক্ষক, কাউন্টিং এজেন্ট এবং সংশ্লিষ্ট আসনের প্রার্থী এবং এজেন্টরা সেখানে প্রবেশ করতে পারবেন। নিয়োগ করা হয়েছে ২৫৬ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী।
নির্বাচন কমিশন নির্দেশ দিয়েছে, কোনো প্রার্থী বা তাদের পোলিং এজেন্টসহ যেসব ভোটকর্মী ভোট গণনায় দায়িত্ব পালন করবেন, তাদের সবাইকে করোনার টিকার দুটি ডোজ অথবা আরটি–পিসিআর বা অ্যান্টিজেন নমুনা পরীক্ষার নেগেটিভ রিপোর্ট নিয়ে আসতে হবে।
গত বৃহস্পতিবার দুপুরে দলের অংশগ্রহণকারী প্রার্থীদের সঙ্গে এক ভার্চ্যুয়াল বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘খাতা–কলম নিয়ে ঢুকতে হবে ভোট গণনাকেন্দ্রে। একবার ভোট গণনাকেন্দ্রে ঢুকে গেলে আর ছাড়া যাবে না বসার টেবিল–চেয়ার। ওখানেই বসে সবকিছুর ওপর নজর রাখতে হবে। কেউ কিছু দিলে খাবেন না। আমাদের জয় নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। আমরা জিতছি। ক্ষমতায় আসছি। সেই ইঙ্গিত সব বুথফেরত সমীক্ষা বলে দিয়েছে। তাই চিন্তা করবেন না, জয় আমাদের নিশ্চিত। তাই ওদের বিভ্রান্তিমূলক প্রচারে কান দেবেন না। ওদের পাতা ফাঁদে পা দেবেন না।’
এদিকে পশ্চিমবঙ্গে করোনা পরিস্থিতির দ্রুত অবনতি হচ্ছে। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় এই রাজ্যে করোনায় মারা গেছেন ৯৬ জন আর আক্রান্ত হয়েছেন ১৭ হাজার ৪১১ জন।