বেশ কিছু দিন আগেই নিয়ন্ত্রণের বাইরে দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম এবং বিশ্বের সপ্তম বৃহত্তম রাষ্ট্র ভারতের করোনা পরিস্থিতি। দেশটিতে দৈনিক মৃত্যু প্রায় তিন হাজারে পৌঁছেছে। প্রতিদিন সংক্রমিত হচ্ছে লাখ লাখ মানুষ। এমন অবস্থায় গোটা দেশই দেখছে মৃত্যুর মিছিল।
তবে পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে ভারতের রাজধানী দিল্লিতে। শ্মশানগুলোতে মৃতদেহ পোড়ানোর আর জায়গা হচ্ছে না। এখন অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার ব্যবহার করা হচ্ছে পার্কিং লটগুলো। এমনকি জায়গা নেই কবরস্থানেও।
এমন পরিস্থিতিতে মৃতদেহ দাহ করার কাঠ ফুরিয়ে গিয়েছে বহু শ্মশানে। কাঠের অভাবে কেয়ারটেকারকে বন্ধ করে দিতে হয়েছে শ্মশানের দরজা। এমন করুণ পরিস্থিতিও দেখছে দিল্লি। দিল্লিতে প্রায় প্রতিদিনই করোনায় মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়ে যাচ্ছে সাড়ে তিন শর গণ্ডি।
সোমবার এখন পর্যন্ত রাজধানীতে মৃতের সংখ্যা ৩৫০। রবিবার ৩৫৭ জন প্রাণ হারিয়েছিলেন ভাইরাসের প্রকোপে। আর তার আগের দিন মৃত্যুর সংখ্যাটা ছিল ৩৪৮। গত সপ্তাহে দিল্লিতে মৃত্যুর গড় হার ছিল ৩০৪। এভাবে দিনের পর দিন এত মানুষের মৃতদেহ সৎকার করতে কার্যত হিমশিম খাচ্ছে শ্মশান আর কবরস্থানের কর্মচারীরা।
জানা গেছে, দিল্লির সরাই কালে খান শ্মশানে দৈনিক ২২ জনের দেহ সৎকারের ব্যবস্থা আছে। আর আপাতত রোজই সেখানে ৬০ থেকে ৭০টি মৃতদেহ আসছে। বিপাকে পড়ে শ্মশানের আশপাশে আরও ১০০টি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করার ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। “প্ল্যাটফর্মগুলো বানাতেও অনেক চাপ লাগছে”, বলেছেন শ্মশানের এক কর্মচারী।
মঙ্গলবারের মধ্যে খুব বেশি হলে ২০টি নতুন প্ল্যাটফর্ম তৈরি হবে। বাকি ৮০টি বানাতে আরো কিছুদিন সময় লাগবে। শ্মশানের কর্মীদের ওপর সম্প্রতি কাজের চাপ এতটাই বেড়ে গেছে যে কোনও কোনও ক্ষেত্রে মৃতের পরিবারের লোকজনকেও কাজে হাত লাগাতে হচ্ছে।
প্রায় একই ছবি দিল্লির বাকি ২৫টি শ্মশান আর কবরখানায়। স্তূপ করে রাখা হচ্ছে মৃতদেহ। সামাল দিতেই পারছেন না কর্মীরা। করোনা পরিস্থিতির ভয়াবহতা চরমে পৌঁছেছে। শুধু দিল্লিই নয়, মৃতদেহ নিয়ে হিমশিম খাচ্ছে দেশটির অন্যান্য রাজ্যগুলোও।