ভারতে করোনার সংক্রমণ আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েই চলেছে। ভারতে এ বছরের শুরুতে দৈনিক ১০ হাজারেরও কম রোগী শনাক্ত হলেও গত বৃহস্পতিবার দৈনিক সংক্রমণ দুই লাখ ছাড়িয়ে গেছে। উপচে পড়া ভিড় এখন ভারতের অন্যতম বড় হাসপাতাল লোক নায়েক জয় প্রকাশ নারায়ন হাসপাতালে। জায়গা সংকুলান না হওয়ায় দুইজনকে রাখা হয়েছে একই বেডে। এ ছাড়া ওয়ার্ডের বাইরে স্তুপ করে রাখা হচ্ছে মারা যাওয়া রোগীদের মরদেহ।
ভারতের সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘ভারতের বর্তমানে দৈনিক সংক্রমণের পরিমাণ যেকোনো দেশে যেকোনো সময়ের চেয়ে সবচেয়ে বেশি। সংক্রমণের এই ঊর্ধ্বগতিতে লোক নায়েক জয় প্রকাশ নারায়ন হাসপাতালে (এলএনজেপি) রোগী বহনকারী অ্যাম্বুলেন্সগুলোর কোনো অবসর নেই। অ্যাম্বুলেন্স না পেয়ে বাস কিংবা তিন চাকার অটোরিকশাতেও আসছে রোগী।
হাসপাতালটির মেডিকেল ডিরেক্টর সুরেশ কুমার বলেন, ‘আমরা নিশ্চয়ই অতিরিক্ত রোগীর ভার বহন করছি। আমরা ইতোমধ্যেই আমাদের সর্বোচ্চ সামর্থ্য কাজে লাগিয়ে ফেলেছি।’
হাসপাতালটিতে প্রাথমিকভাবে গুরুতর করোনা রোগীদের ৫৪টি বেড ছিল। তবে সেই সংখ্যা বাড়িয়ে বর্তমানে করা হয়েছে ৩০০। তারপরও রোগীর চাপ সামলানো যাচ্ছে না। রোগীরা বাধ্য হচ্ছেন বেড শেয়ার করতে। আর মর্গে নেওয়ার আগে ওয়ার্ডের বাইরে স্তুপ করে রাখা হচ্ছে সদ্য মৃতদের মরদেহ।
হাসপাতালটির মেডিক্যাল ডিরেক্টর সুরেশ কুমার বলেন, \”আজ আমরা ১৫৮ জনকে নতুন ভর্তি নিয়েছে। এর প্রায় সবার অবস্থাই গুরুতর।\”
করোনার দ্রুত সংক্রমণ ঘটানো নতুন ভ্যারিয়েন্টের কারণে ভারতে আক্রান্তের সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে। সুরেশ কুমার বলেন, ‘মানুষ করোনা নির্দেশনা মানছে না।’
হাসপাতালের মর্গের বাইরে স্বজনদের মরদেহের জন্য তপ্ত রোদের মধ্যে অপেক্ষা করছেন অনেকে। ৪০ বছর বয়সী প্রশান্ত মেহরা জানান ৯০ বছর বয়সী দাদীকে লোক নায়েক হাসপাতালে ভর্তির আগে আরেকটি হাসপাতালে ভর্তির চেষ্টা চালিয়েছিলেন। তবে তাতে কোনো লাভ হয়নি।
প্রতিদিনই করোনায় আক্রান্ত মানুষের নতুন রেকর্ড হচ্ছে। রাজ্য হিসাবে মহারাষ্ট্র এবং শহর হিসাবে দিল্লি এখন করোনা রাজধানী। তবে বেঙ্গালুরুতেও করোনা খুবই বেড়েছে। কেরালা সরকার শুক্র ও শনিবার দুই থেকে আড়াই লাখ মানুষের করোনা পরীক্ষা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’