মিশরের সিনাই উপদ্বীপের পশ্চিমে অবস্থিত কৃত্তিম সামুদ্রিক সুয়েজ খালে আড়াআড়িভাবে আটকে পড়া পণ্যবাহী জাহাজ এমভি এভার গিভেনকে বাজেয়াপ্ত করল মিশর প্রশাসন। পণ্যবাহী জাহাজটির মালিকপক্ষের পক্ষ থেকে ক্ষতিপূরণ বাবদ ৯০০ মিলিয়ন ডলার মেটানো না পর্যন্ত সেটি থাকবে মিশর সরকারের অধীনে। আদালতের নির্দেশের পরই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির কর্তৃপক্ষ। সুয়েজ খাল কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে এমনটাই জানানো হয়েছে।
এর আগে গত ২৩ মার্চ প্রায় চারটি ফুটবল মাঠের সমান এমভি এভার গিভেন পণ্যবাহী জাহাজটি আটকে পড়েছিল সুয়েজ খালে। বালুঝড়ের কারণে বিশ্বের অন্যতম ব্যস্ততম এই জলপথে আড়াআড়িভাবে দাঁড়িয়ে পড়েছিল ২ লাখ টনের জাহাজটি। ফলে দু’দিক থেকে আটকে পড়েছিল ৪২০টি পণ্যবাহী জাহাজ। শেষপর্যন্ত প্রায় এক সপ্তাহের চেষ্টায় জাহাজটিকে পুনরায় ভাসানো সম্ভব হয়। কিন্তু ততদিনে ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়ায় ৯০০ মিলিয়ন ডলার। শুধু তাই নয়, সুয়েজ খালে পণ্যবাহী জাহাজ আটকে থাকায় ১২ থেকে ১৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ক্ষতি হয়েছে মিশরের। এই সমস্ত কিছু মিলিয়েই ৯০০ মিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণ ধার্য করা হয়।
মিশরের স্থানীয় একটি সংবাদপত্রে সুয়েজ খাল কর্তৃপক্ষের প্রধান ওসামা রাবি জানিয়েছেন, এভার গিভেন জাহাজটি ক্ষতিপূরণের ৯০০ মিলিয়ন ডলার দিতে ব্যর্থ হওয়ায়, সেটিকে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। তবে অপর একটি সূত্রের মতে, জাহাজটির জাপানি মালিক, সেটির সংস্থা, ইনসিওরেন্স কোম্পানি এবং সুয়েজ খাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ক্ষতিপূরণের অর্থ নিয়ে আলোচনাও চলছে।
উল্লেখ্য, কৌশলগত দিক থেকেও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সুয়েজ খাল লোহিত সাগর ও ভূমধ্যসাগরকে সংযুক্ত করে। এটি এশিয়া ও ইউরোপের মধ্যে সংক্ষিপ্ততম জলপথ। ফলে এটি যথেষ্ট ব্যস্ত পথ। কিন্তু গত ২৩ মার্চ থেকে এমভি এভার গিভেন আড়াআড়িভাবে আটকে পড়ার পর পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায় ওই জলপথ। শেষপর্যন্ত ছ’দিনের চেষ্টায় টাগবোট ও এক্সকাভেটর বাহিনীর সাহায্য নিয়ে ফের পাড় থেকে মুক্ত হয়ে ভেসে উঠেছে ১ হাজার ৩০০ ফুট লম্বা জাহাজটি।