গত প্রায় এক মাসেরও বেশী সময় ধরে মিয়ানমানজুড়ে চলছে ব্যাপক বিক্ষোভ। গত ১ ফেব্রুয়ারি দেশটির সেনাবাহিনী অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে। ক্ষমতাসীন দলের নেতা অং সান সু চি ও প্রেসিডেন্ট উইন মিন্টকে করা হয় গৃহবন্দি।
দেশটির সাধারণ জনগণ এরপর থেকেই আন্দোলনে রাস্তায় নেমে এসেছে। রাজপথে তারা সেনাবিরোধী কঠোর আন্দোলন গড়ে তুলেছে।
দেশটির আইনশঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ইতোমধ্যে আন্দোলনকারীদের ওপর চড়াও হয়েছে। আইনশঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গুলিতে এরই মধ্যে ৫০ জনের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে দেশটিতে।
তবে আন্দোলনকারীরা এবার বেছে নিয়েছেন নতুন কৌশল। টহলরত সেনা ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কবল থেকে বাঁচতে তারা সড়কজুড়ে বাঁশ ও রশি টানিয়ে তাতে ঝুলিয়ে দিয়েছেন নারীদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক লুঙ্গি। নতুন এই কৌশল মূলত রাজপথে সেনা সদস্য ও পুলিশদের ঠেকাতেই বের করছেন আন্দোলনকারীরা।
সম্প্রতি মিয়ানমারের বেশ কয়েকটি সড়কে লুঙ্গির পাশাপাশি নারীদের অন্তর্বাসও ঝুলিয়ে রাখতে দেখা গেছে। দেশটির প্রাচীন বিশ্বাস, নারীদের এসব পোশাকের নিচ দিয়ে গেলে পুরুষদের প্রাণরস নিঃশেষ হয়ে যায়। স্থানীয়ভাবে পুরুষদের এই ক্ষমতাকে ‘হপনি’ বলা হয়।
বার্তা সংস্থা এএফপিকে অধিকারকর্মী থিনজার শুনলি ওয়াই বলেন, “নারীদের লুঙ্গির নিচ দিয়ে যাওয়ার অর্থ হচ্ছে, তাদের হপনি নিঃশেষ হয়ে যাবে।” থিনজার আরো জানান, কিছু সেনা নারীদের লুঙ্গি স্পর্শ করতেও নারাজ। কারণ তাদের আশঙ্কা এর ফলে হয়তো তাদের সম্মুখ সারিতে থাকার সুযোগ নষ্ট হয়ে যাবে।
থিনজার বলেন, “এলাকাগুলোতে যখন রশির ওপর লুঙ্গি টানিয়ে রাখা হয়, তখন পুলিশ ও সেনা সদস্যরা রাস্তায় যেতে পারে না, তারা এর নিচ দিয়ে যেতে পারে না। তাই তাদেরকে এগুলো নামাতে হয়।”
ইয়াঙ্গুনের সান চাউং শহরতলির সড়কে লুঙ্গি ঝুলিয়ে রাখার কয়েকটি ছবি ফেসবুকে পোস্ট করা হয়েছে। এতে দেখা গেছে সেনারা ট্রাকের ওপর দাঁড়িয়ে লুঙ্গি সরাচ্ছে। কিছু কিছু লুঙ্গিতে জান্তা প্রধান জেনারেল মিন অং হ্লাইংয়ের চেহারা আঁকা হয়েছে। নারীদের লুঙ্গিতে পুরুষের ছবি আঁকা হলে তার প্রাণরস নিঃশেষ হয়ে যাবে বলে প্রচলিত কুসংস্কার থেকেই এই কাজটি করা হয়েছে।
সংবাদ সূত্রঃ ডেকান হেরাল্ড / বার্তা সংস্থা এএফপি