জার্মানি, সুইডেন ও পোল্যাণ্ড থেকে রাশিয়ার তিন কূটনীতিক বহিষ্কার

ইউরোপের তিন দেশ জার্মানি, সুইডেন ও পোল্যাণ্ড থেকে পূর্ব ইউরোপে অবস্থিত বিশ্বের বৃহত্তম দেশ রাশিয়ার তিন কূটনীতিককে বহিষ্কার করা হয়েছে। এর আগে জার্মানি, সুইডেন ও পোল্যান্ডের কূটনীতিকদের বহিষ্কার করে রাশিয়া। এর চারদিনের মাথায় এই তিন দেশ পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে রুশ কূটনীতিকদের বহিষ্কার করে।

গত সোমবার (৮ ফেব্রুয়ারি) সুইডেন, জার্মানি ও পোল্যান্ডের পররাষ্ট্র দপ্তর থেকে রুশ কূটনীতিকদের বহিষ্কারের কথা জানানো হয়। তিনটি দেশই গত সপ্তাহে তাদের কূটনীতিককে মস্কো থেকে বহিষ্কারের বিষয়টিকে ‘অগ্রহণযোগ্য’ বলে উল্লেখ করেছেন।

রাশিয়ার বিরোধী নেতা ও প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের কট্টর সমালোচক অ্যালেক্সি নাভালনির পক্ষে ‘অবৈধ বিক্ষোভে অংশ নেওয়ার’ অভিযোগে সুইডেন, জার্মানি ও পোল্যান্ডের কূটনীতিকদের বহিষ্কার করে রাশিয়া। এ বিষয়টিকে মস্কো তার অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বাইরের হস্তক্ষেপ বলে বিবেচনা করে।

গত শুক্রবার মস্কোতে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গে লাভরভের সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতি–বিষয়ক প্রধান জোসেফ বোরেল বৈঠক করার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ওই কূটনীতিকদের বহিষ্কারের ঘোষণা আসে।

কূটনীতিক বহিষ্কারের পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা বলেন, ইউরোপের তিন দেশ থেকে রুশ কূটনীতিকদের বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত ঠিক হয়নি। পশ্চিমা দেশগুলো আমাদের দেশের বিরুদ্ধে যে ব্যবস্থাগুলো নিচ্ছে, এটি তার ধারাবাহিকতা মাত্র। যেটিকে আমরা রাশিয়ায় অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বাইরের হস্তক্ষেপ বলে বিবেচনা করছি।’

গত ১৭ জানুয়ারি জার্মানির বার্লিন থেকে রাশিয়ার মস্কোয় ফেরেন নাভালনি। সে সময় বিমানবন্দরেই গ্রেপ্তার হন তিনি। পরে তাকে ৩০ দিনের আটকাদেশ দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়। সেই থেকে কারাগারেই আছেন তিনি। ২০২০ সালের আগস্টে রাশিয়ায় বিষ প্রয়োগের শিকার হয়ে নাভালনি। এরপর জার্মানির বার্লিনে গিয়ে চিকিৎসা নিয়ে দেশে ফেরেন তিনি।

৩ ফেব্রুয়ারি নাভালনিকে সাড়ে তিন বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন মস্কোর একটি আদালত। ২০১৪ সালের জালিয়াতির একটি মামলায় স্থগিত সাজার শর্ত লঙ্ঘনের দায়ে নাভালনিকে এ কারাদণ্ড দেওয়া হয়। নাভালনির সাজার রায় ঘোষণার পর তাৎক্ষণিক বিক্ষোভের ডাক দেন তার সমর্থকেরা। তার সমর্থনে রাশিয়াজুড়ে বিক্ষোভ শুরু করেন হাজারো মানুষ।

নাভালনির তিন বছরের সাজার রায়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গন থেকে তীব্র প্রতিক্রিয়া এসেছে। ইউরোপের শীর্ষ মানবাধিকার সংস্থা কাউন্সিল অব ইউরোপ বলেছে এই রায় সব বিশ্বাসযোগ্যতার বাইরে।

Scroll to Top