শিগগিরই বিশ্বের শীর্ষ ১০ অর্থনীতির দেশের একটি হবে পশ্চিম এশিয়ার রাষ্ট্র তুরস্ক। দেশটিকে শীর্ষ ১০’এ নিতে বিদেশি বিনিয়োগে গুরুত্ব দিচ্ছেন প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান। দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে কাজ করা হচ্ছে। দেশের প্রবৃদ্ধি ভালো অবস্থানে নিতে বহুমুখী উদ্যোগ নিয়ে কাজ করছে দেশটির সরকার। সম্প্রতি দেশটির মালাতিয়া প্রদেশে একটি সেতু উদ্বোধন করে এসব কথা জানান তিনি।
তুর্কি প্রেসিডেন্ট বলেন, দেশকে শীর্ষ ১০’এ নিতে বৃহত্তম বিনিয়োগগুলোকে বৃহত্তম প্রকল্পে রূপান্তরের কাজ চলছে। বিশ্বের অর্ধেক মেগা প্রকল্পের কাজ তুরস্ক একাই করতে পারে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। পাশাপাশি মহাকাশ প্রযুক্তি, হাইটেক আর কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে তুরস্কের কাজের তুলনা হয় না বলেও মনে করেন তিনি।
উৎসাহ নিয়ে তিনি বলেন, আমাদের দেশের অবকাঠামো খাত অনেক শক্তিশালী। প্রত্যেক ক্ষেত্রেই আমাদের লক্ষ্যমাত্রা ও সক্ষমতা বাড়িয়ে তুলছি আমরা। নতুন উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নিচ্ছি। নতুন নতুন উৎপাদনের ক্ষেত্র তৈরি করছি।
করোনা মহামারির কারণে ২০২০ সালে বিপর্যস্ত ছিল দেশটির অর্থনীতি। চলতি বছর (২০২১) ৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য রয়েছে তুরস্ক সরকারের। পাশাপাশি মূল্যস্ফীতি সাড়ে ১১ শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্যও রয়েছে। ২০২০ সালের ডিসেম্বরে দেশটির মূল্যস্ফীতি ১৫ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছিল। সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে গিয়েছিল নিত্যপণ্য। ওই সময় মানুষ চাল আর পাস্তা কিনে মজুদ করেছিল।
জ্বালানি তেল আর সারের দাম বাড়ায় দেশটিতে বেড়েছে কৃষিকাজে খরচ। বৈরি আবহাওয়ায় ব্যাহত হয়েছে উৎপাদন। তুরস্কের মুদ্রা লিরার মান কমায় গেল বছর আমদানি খরচ পৌঁছেছিল ৯শ’ কোটি ডলারে। করোনার কারণে ২০২০ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিকে ১০ শতাংশ সংকুচিত হয় দেশটির অর্থনীতি। জুলাই থেকে সেপ্টেম্বরে এসে কিছুটা স্থিতিশীল হয় তুরস্কের অর্থনীতি।
তবে তুরস্কের বাজেট ঘাটতি এখনও অনেক বেশি। ২০২০ সালে যা ছিলো মোট জিপিডি প্রবৃদ্ধির ৫ শতাংশ। ২০২১ সালে বাজেট ঘাটতি জিডিপি’র আড়াই শতাংশে নেমে আসবে বলে প্রত্যাশা অর্থনীতিবিদদের। এর আগে ২০১৮ সালে সবশেষ এতো অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছেছিল তুরস্কে নিত্যপণ্যের দাম।
এদিকে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল আইএমএফ বলছে, চলতি বছর তুরস্কের অর্থনীতির ৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হবে। করোনার ক্ষতিও কাটিয়ে উঠবে দেশটি। চলতি বছর বাজেট ঘাটতি সাড়ে ৩ শতাংশে নেমে আসবে বলেও পূর্বাভাস দিয়েছে আইএমএফ।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের প্রথমে দেশের মানুষের জীবনমান উন্নয়নে নজর দেয়া প্রয়োজন।