নারীদেরকে মন্দিরে প্রবেশাধিকার দিলে সেটি আর পবিত্র স্থান থাকবে না, থাইল্যান্ডের মতো যৌন পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত হবে বলে মন্তব্য করেছেন ভারতের কেরালার শবরীমালা মন্দিরের প্রধান প্রায়ার গোপালকৃষ্ণণ।
তিনি বলেছেন, আদালত এ ব্যাপারে নারীদের প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করলেও তারা মন্দিরে ঢোকার স্পর্ধা পাবে না।
গতকাল শুক্রবার কিছু মন্দিরে নারীদের প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধ বিষয়টি নিয়ে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট দেখভাল করবে জানানোর ঘোষণা আসার পরপরই এ মন্তব্য করেছেন গোপালকৃষ্ণণ।
এর আগেও তিনি একাধিকবার এ ধরনের মন্তব্য করে আলোচনায় এসেছিলেন বলে হিন্দুস্তান টাইমসের এক প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে।
গোপালকৃষ্ণণ বলেন, এটা অনেক পুরনো একটি প্রথা, একে সম্মান জানাতে সবাই বাধ্য। যদি কোনো কারনে এ ঐতিহ্যটি ভেঙে যায় তাহলে নানা অনর্থ ঘটতে পারে। সেখানে নারীদের পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দেওয়া যাবে কি না; তার চেয়ে বড় বিষয় হল সেখানে নানা অনৈতিক কার্যকলাপ ঘটতে পারে। মন্দিরটি যৌন পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত হবে।
মন্দির প্রধানের এ মন্তব্যের বিপরীতে রাজ্যের ধর্ম স্থাপনা বিষয়ক মন্ত্রী কাকাম্পল্লি সুরেন্দ্রণ বলেন, তিনি (গোপালকৃষ্ণণ) কিভাবে এধরনের নির্বোধ মার্কা কথা-বার্তা বলতে পারেন তা আসলে আমার ঠিক জানা নেই। তিনি একাধারে পূণ্যার্থী ও নারীদের অপমান করেছেন। ক্ষমা প্রার্থনা করে এই বক্তব্য তার প্রত্যাহার করে নেওয়া উচিত।
ভারতের এই মন্দিরটি পূণ্যার্থী সমাগমের দিক থেকে বিশ্বের দ্বিতীয়। এর আগে রয়েছে মুসলিমদের পবিত্র মক্কা নগরী।
তবে এই মন্দিরের ভেতরে ১২ থেকে ৫০ বছরের নারীদের প্রবেশাধিকার দেওয়া হয় না। কারণ এসময় তাদের ঋতুচক্র চলার সম্ভাবনা থাকে। তবে এর থেকে বেশি বয়সী নারীদের ঢুকতে দেওয়া হয়।
কারণ হিসেবে কথিত আছে, দেবতা আয়াপ্পন ব্রহ্মচারী বিবাহিত নন। তাই ওই মন্দিরে ঋতুস্রাবকালীন সময়ে কোনও নারীর প্রবেশ নিষেধ। তবে প্রবেশাধিকার দিতে কোনও নারীর ঋতুস্রাব চলছে কি না তা সনাক্তের জন্য অত্যাধুনিক যন্ত্রের দ্বারা ‘পবিত্রতা’ যাচাই করার পরিকল্পনা গ্রহণের প্রস্তাব করা হয়।
নারীদের প্রতি মন্দির প্রধানের এমন অপমান জনক বক্তব্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে বিভিন্ন সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৩০ ঘণ্টা, ১৪ অক্টোবর ২০১৭
লেটেস্টবিডিনিউজ.কম/সাদ