মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে অব্যাহত গণহত্যা ও সহিংসতায় বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে আলোচনা চলছে বলে জানিয়েছেন মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সেলর অং সান সু চি। রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে এক বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান।
তবে কী পদ্ধতিতে তাদের ফেরত নেওয়া হবে এ বিষয়ে সু চি কোনো সদুত্তর দেননি। যদিও রোহিঙ্গা ফেরাতে ১৯৯২ সালের ঘোষণাকে ভিত্তি করার কথা ইতোপূর্বে বলেছে সু চির দফতর, পাশাপাশি যাচাই করার কথাও বলা হয়েছে। সুচি বলেন, আমাদের দেশের বিরুদ্ধে অনেক সমালোচনা হয়েছে। তবে কেউই আমাদের দেশের পরিস্থিতি বিবেচনা করেননি।
তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আক্ষেপ প্রকাশ করে বলেন, আমরা কী পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে গেছি, তা কেউই বোঝার চেষ্টার করেনি। তিনি বলেন, আমাদের দেশের উন্নয়ন এবং আমাদের চাহিদা কী, তা আমাদের চেয়ে অন্যরা কেউ তা ভালো বুঝবে না। রাখাইন রাজ্যে অনেক কিছু করার আছে উল্লেখ করে সুচি বলেন, সমালোচনা আর পাল্টা অভিযোগ না তুলে আমরা করে দেখাতে চাই। রাখাইন রাজ্যে অনেক কিছুই করার আছে। অং সান সুচি বিভিন্ন দেশের সমালোচনার জবাব দিলেও নিজ দেশের নিরাপত্তা বাহিনীর সহিংসতা সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করেননি।
প্রসঙ্গত, ২৫ আগস্ট মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে আরকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (এআরএসএ-আরসা)একযোগে ৩০টি পুলিশ ও সেনাছাউনিতে হামলা চালালে শতাধিক লোক নিহত হয়। এসময় সরকারি বাহিনীর ১২ জন সদস্যও নিহত হন। এরপর সরকারি বাহিনীর নৃশংসতার কারণে প্রায় সহস্রাধিক লোকের প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। যদিও এ কারণে চার শতাধিক লোকের প্রাণহানির কথা বলা হয়েছে। এছাড়া পালাতে গিয়ে নৌকাডুবিতে অনেক রোহিঙ্গা শরণার্থীর মারা যান। রাখাইন রাজ্যে সহিংসতার পর এ পর্যন্ত পাঁচ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থী বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিয়েছেন। জাতিসংঘ রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতনের ঘটনাকে ‘জাতিগত নির্মূল’ বলে আখ্যা দিয়েছে এবং এ ঘটনা পাঠ্যবইতে লেখা থাকবে বলে উল্লেখ করেছে।
বাংলাদেশ সময়: ১২৫০ ঘণ্টা, ৩০ অক্টোবর ২০১৭
লেটেস্টবিডিনিউজ.কম/কেএসপি