যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনী ফলাফলের দিকে তাকিয়ে আছে গোটা বিশ্ব। ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেন নাকি রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ট ট্রাম্প, কে আসছেন হোয়াইট হাউজে। তবে বুধবার প্রকাশিত নির্বাচনী ফলাফলে দুই প্রার্থীকে কাছাকাছি অবস্থানে দেখা যাওয়ায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে বিশ্ব পুঁজিবাজার ও মুদ্রাবাজারে।
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের একটি ঘোষণা বিনিয়োগকারীদের হতাশাকে বড় আশঙ্কায় পরিণত করেছে। বুধবার তিনি নিজেকে বিজয়ী দাবি করে নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ তুলেছেন। এমনকি ভোটগণনা বন্ধ করতে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ারও হমকি দিয়েছেন।
বিশ্লেষকরা আগেই বলেছিলেন, নির্বাচনী ফলে জো বাইডেন স্পষ্ট বিজয়ে থাকলে এটি আইনি লড়াইয়ে যেতে পারে। এমন অনিশ্চয়তা ঘিরে ধরেছে বিশ্ব অর্থবাজারকে। বিনিয়োগকারীরা আশা করেছিলেন, সুস্পষ্ট বিজয়ের পাশাপাশি সিনেট ও প্রতিনিধি পরিষদও ডেমোক্র্যাটদের দখলে যাবে। কিন্তু প্রকাশিত ফল তাদের অনিশ্চয়তায় ফেলে দিয়েছে, যার প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে শেয়ারবাজারে।
ট্রাম্পের ঘোষণার ফলে গতকাল ইউরোপীয় শেয়ারবাজারে দিনের শুরুটা নিম্নমুখী হলেও পরে তা ঊর্ধ্বমুখী হয়। এশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ারবাজারেও মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। দরপতন হয়েছে মুদ্রাবাজারে। টানা দুই দিন দাম কমার পর ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে জ্বালানি তেলের বাজার।
গতকাল লন্ডনের বেঞ্চমার্ক এফটিএসই-১০০ সূচক বেড়েছে ০.৩ শতাংশ, যদিও ডলারের বিপরীতে পাউন্ডের দর পড়েছে ০.৭ শতাংশ। চীনা মুদ্রা ইউয়ানের দর পড়েছে ১.৪ শতাংশ। ইউরোজোনের ফ্রাংকফুর্ট শেয়ারের দর বেড়েছে ০.১ শতাংশ এবং প্যারিসে সূচক বেড়েছে ০.৫ শতাংশ।
এশিয়ায় নিক্কি সূচক বেড়েছে ১.৭ শতাংশ, সাংহাই সূচক বেড়েছে ০.২ শতাংশ; তবে হংকংয়ের শেয়ারবাজারে সূচক কমেছে ০.২ শতাংশ। এ ছাড়া সিউল, মুম্বাই, ওয়েলিংটন ও ব্যাংকক শেয়ারবাজারে সূচক ঊর্ধ্বমুখী হলেও সিডনি ও জাকার্তায় দর পড়েছে।
গতকাল ট্রাম্পের এই ঘোষণার পরই দাও শেয়ারবাজারে সূচক পড়ে ১.৫ শতাংশ। তবে এসঅ্যান্ডপি-৫০০ সূচক বাড়ে ০.৬ শতাংশ এবং নাসদাকে সূচক বাড়ে ৩ শতাংশ। গতকাল জ্বালানি তেলের দাম বাড়ে ২.৮ শতাংশ।
কর্নারস্টোন ক্যাপিটাল গ্রুপের সিইও এবং প্রতিষ্ঠাতা এরিকা কার্প সতর্ক করে দিয়ে বলেন, ‘প্রতিদ্বন্দ্বিতা যত কাছাকাছি থাকবে, ঝুঁকি তত বেশি, যা অর্থবাজারের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।’
এ ছাড়া জো বাইডেন ও ডেমোক্র্যাটদের পরাজয় ঘটলেও পুঁজিবাজার ও বিশ্ব অর্থবাজার অস্থির হয়ে উঠবে বলে মনে করছেন অনেকে। তবে অর্থনীতিবিদদের আরেকটি অংশের ধারণা, যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে যারাই ক্ষমতায় আসুক, বড় অঙ্কের প্রণোদনা দেবে; যা যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি ও বিশ্ব অর্থবাজারের জন্য ইতিবাচক হবে।