বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর রাষ্ট্র আমেরিকায় আজ মঙ্গলবার (৩ নভেম্বর) অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ৫৯তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। এর মধ্য দিয়ে নির্বাচিত হবে দেশটির ৪৬তম প্রেসিডেন্ট। পেনসিলভেনিয়ার যুবক আর্থার বেনসন জর্জ ফ্লয়েডের হত্যার ঘটনার পর ঠিক করেন তিনি ‘ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার্সে’ অংশগ্রহণ করবেন। যখন প্রতিবাদে সামিল হন তখন দেখলেন তাদের ৫০ জন সমর্থকের বিরুদ্ধে রয়েছে ৩০০ জন বিরোধী, হাতে ধরা বিশালাকৃতির স্বয়ংক্রিয় রাইফেল।
আর্থারের কথায়, “আমি অনিচ্ছা সত্ত্বেও বন্ধুক কিনেছি। আর কোনও উপায় ছিল না। ওঁরা যদি আমার দিকে বন্দুক তোলে নিজেকে বাঁচাতে তাই কিনেছি।”
আর্থার নিজেও কৃষ্ণাঙ্গ। আজ ৩ নভেম্বর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। তার আগে যেভাবে বেড়েছে বন্দুক কেনার হিড়িক তা স্বস্তি দিচ্ছে না প্রশাসনকে। সকলেই যে ইচ্ছে করে এমনটা করছে তা নয়। এই ক্রেতারদের মধ্যে বেশিরভাগই প্রথমবারের জন্য বন্দুক কিনছেন। আমেরিকায় মেরুকরণের রাজনীতি, মহামারী, প্রতিবাদের আগুনের মাঝে এই বন্দুক চাহিদা দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ঘিরে অশান্ত আবহ তৈরি করছে।
পরিসংখ্যান যদি দেখা যায় তাহলে মার্চ মাসে বন্দুক কেনা হয়েছে ৩০ লাখ ৭০ হাজার, জুনে সেই সংখ্যা ৩০ লাখ ৯০ হাজার আর সেপ্টেম্বরে এক লাফে তা হয়েছে ২ কোটি ৮০ লাখ ৮০ হাজার। এফবিআই জানিয়েছে, এই সংখ্যা গতবারের পরিসংখ্যানকেও হার মানিয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময়ও বন্দুক কেনার চাহিদা বৃদ্ধি হয়েছিল। তবে সেই সংখ্যা ছিল এ বছরের থেকে কম। ২ কোটি ৭০ লাখ ৫০ হাজার বন্দুক বিক্রি হয়েছিল।
আর্থার বেনসন বলেন, “আমি বন্দুক সঙ্গে নিয়ে চলার মানুষ নই। তবে আমি এই অধিকারটি প্রকাশ করার ক্ষমতা রাখতে চাই। এই বছরে সামাজিক অস্থিরতা,আমাদের মূল্যবোধগুলো এবং যতটা আমরা নিজেদের রক্ষার জন্য করতে ইচ্ছুক রয়েছি এ বিষয়ে যত প্রশ্ন না করা যায় ততই ভাল।”
বেনসন এও বলেন যে তার বেশ কয়েকজন পরিচিত ব্যক্তি বন্দুকের মালিকানার বিষয়ে চিন্তাভাবনা করছেন। “গৃহযুদ্ধ” হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে বহু আমেরিকাবাসী। কিন্তু কেন এমনটা ভাবছেন? আর্থার বেনসন বলেন, “আপনি যখন দেখছেন অপর পক্ষ আইনের শাসন নিয়ে ছেলেখেলা করছে, তখন আপনাকেও ভেবে দেখতে হবে তারা কী কী করতে পারে। এটা সত্যিই সংস্কৃতির মধ্যে যুদ্ধ তৈরি করবে।”
বন্দুক কি খুব সহজেই পাওয়া যাচ্ছে? বেনসন জানালেন তার শটগান এবং পিস্তল কেনার ক্ষেত্রে কোনও অসুবিধা হয়নি তবে গোলাবারুদ-কার্তুজ সরবরাহ কম হচ্ছে। দামও বেড়েছে অনেকটাই। আগে ৫০টি রাউন্ড যদি ১৫ ডলারে পাওয়া যেত এখন তা ৪০ ডলার।
এদিকে সহিংসতার বিষয়টি টের পেয়ে ওয়ালমার্ট তাদের বিপণি থেকে বন্দুক বিক্রি বন্ধ করেছে। সরিয়ে রাখা হয়েছে গোলাবারুদও।