ভারতের অন্যতম ডানপন্থী ও উগ্র হিন্দু জাতীয়তাবাদী সংগঠন আরএসএস এর প্রধান মোহন ভাগবত বলেছেন, বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে সুখে-শান্তিতে রয়েছেন ভারতীয় মুসলিমরা। রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (আরএসএস) এই নেতার দাবি, ভারতের মতো কোনো দেশে এতটা সুরক্ষিত নন মুসলিমরা।
মহারাষ্ট্রের হিন্দি ম্যাগাজিন বিবেককে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের প্রধান মোহন ভাগবত এমনটাই দাবি করেছেন।
তাঁর দাবি, ভারতের উপর যখনই কোনও আঘাত হয়েছে তখন সর্বধর্মের মানুষ একসঙ্গে রুখে দাঁড়িয়েছে। তাঁর কথায়, ধর্মীয় ভেদাভেদ তারাই করে যাদের স্বার্থে আঘাত লাগে। দেশজুড়ে সাম্প্রদায়িক অসহিষ্ণুতার পরিবেশের মধ্যে ভাগবতের এই বক্তব্য বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
মোহন ভাগবত আরো দাবি করেছেন, ভারতে মুসলিমদের অস্তিত্ব বিপন্ন নয়। বরং সারা বিশ্বের মধ্যে ভারতেই মুসলিমরা সবচেয়ে সুখে রয়েছেন বলে দাবি তাঁর। তাঁর কথায়, “মহারানা প্রতাপ সিংয়ের সেনায় অনেক মুসলিম ছিলেন। তাঁরা মুঘলদের বিরুদ্ধে লড়েছেন। এটাই আমাদের ভারতবর্ষ। আমাদের দেশের নাম উচ্চারিত হলে সংহতির কথাই আসে সবার আগে। হিন্দু-মুসলমানের মধ্যে ভেদাভেদ করে কিছু মানুষ। নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য।” তিনি আরও বলেছেন, “দেশের সংবিধানে কোথাও লেখা নেই যে ভারতে মুসলিমদের জন্য কোনও জায়গা নেই। কোথাও বলা নেই যে, এদেশে থাকতে হলে হিন্দুদের শ্রেষ্ঠ বলে মেনে নিতে হবে। যখনই দেশের সংস্কৃতির উপর আক্রমণ হয়েছে তখন সর্বধর্মের মানুষ একসঙ্গে রুখে দাঁড়িয়েছে। তা সে হিন্দু হোক বা মুসলমান। এটাই আমাদের দেশ। আপনারা পাকিস্তানে দেখুন। সেখানে সংখ্যালঘু হিন্দুদের একঘরে করে রাখা হয়েছে। কিন্তু ভারতে মুসলিমরা সুখে রয়েছে।”
অযোধ্যার রামমন্দির প্রসঙ্গেও মন্তব্য করেছেন আরএসএস প্রধান। তিনি বলেছেন, এই মন্দির পূজার্চনার থেকেও দেশের মূল্যবোধ ও চারিত্রিক দৃঢ়তার প্রতীক। ভারতে মন্দির গুলো ভাঙার অন্যতম কারণ হল দেশের মানুষের মূল্যবোধকে নষ্ট করে দেওয়া। ভগবান শ্রীরামের মন্দির ভেঙে দেওয়ার ফলে হিন্দুরা অপমানিত হয়েছিল। আমরা সেটাকে পুনরায় স্থাপিত করতে চেয়েছি। তাই আজ ঐতিহাসিক মন্দির তৈরি হচ্ছে। তবে দেশে প্রতিটি মানুষের নিজের ধর্ম পালনের অধিকার রয়েছে। তার জন্য কাউকে জবাবদিহি করার কোনও প্রয়োজন নেই বলে মনে করেন মোহন ভাগবত।
: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা