মধ্য প্রাচ্যের দেশ ইরানের বিরুদ্ধে ফের নিষেধাজ্ঞা জারি করতে জাতিসংঘের কাছে দাবি জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। শুধু মৌখিক দাবিই নয়, আমেরিকার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দপ্তরে গিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে এই দাবি জানাবেন। ২০১৫ সালের চুক্তিতে ইরানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা হয়েছিল।
বিশেষজ্ঞদের ধারাণা, আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জিততে মরিয়া ট্রাম্প এখন ভোটারদের সহানুভূতি পাওয়ার জন্য বিভিন্ন বিতর্কিত বিষয় এভাবে সামনে আনছেন। তিনি চীনের বিরুদ্ধে কার্যত যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন। এ বার ইরানের বিরুদ্ধে আবার নিষেধাজ্ঞা জারির দাবি তুললেন এবং জাতিসংঘের কাছে আনুষ্ঠানিক দাবিও জানানোর সিদ্ধান্ত নিলেন।
ট্রাম্প জানিয়েছেন, \’একে বলে স্ন্যাপব্যাক মেকানিজম। যা আদৌ বিরল ঘটনা নয়।\’ ঘটনা হলো, আমেরিকার বন্ধু দেশগুলোই ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্ত অনুমোদন করছে না। যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্স তো বটেই নিরাপত্তা পরিষদের বাকি দুই স্থায়ী সদস্য রাশিয়া ও চীনও চায় ২০১৫ সালের চুক্তি বহাল থাক। এই চুক্তিতে নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সব সদস্য সই করেছিল। তা ছাড়া সই করেছিল জার্মানি।
এই চুক্তিতে ঠিক হয়েছিল, ইরান তার পরমাণু কর্মসূচিতে কাটছাঁট করবে, বিনিময়ে তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা হবে। এই চুক্তিতে একটা স্ন্যাপব্যাক মেকানিজমের কথা বলা হয়েছে। সেটা হলো, তেহরান যদি চুক্তির শর্ত ভঙ্গ করে, তা হলে আবার তাদের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি হবে।
যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি জানিয়েছে, ইরানের পরমাণু চুক্তি নিয়ে আমেরিকার আর কিছু বলার অধিকার নেই। কারণ, দুই বছর আগে তারা চুক্তি থেকে বেরিয়ে গেছে। কিন্তু আমেরিকার দাবি, যেহেতু তারা মূল চুক্তিতে সই করেছিল এবং তারা নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য, তাই স্ন্যাপব্যাক মেকানিজম চালু করার দাবি তারা করতেই পারে।
পম্পেও বলেছেন, \’আমাদের আশা, নিরাপত্তা পরিষদের অন্য প্রস্তাবের মতো ইরানের ক্ষেত্রে এই মেকানিজমও চালু হবে। আমরা মনে করি, বিশ্ব তার দায়িত্ব পালন করবে।\’
সপ্তাহখানেক আগে নিরাপত্তা পরিষদে যুক্তরাষ্ট্র অনুরোধ করেছিল যে, ইরানের বিরুদ্ধে অস্ত্র কেনাবেচা সংক্রান্ত নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ বাড়ানো হোক। কিন্তু সেই অনুরোধ খারিজ হয়ে যায়। তারপরেই স্ন্যাপব্যাক মেকানিজম চালু করার দাবি তুলল ট্রাম্প প্রশাসন।