মেয়ের সামনেই গুলি করে সাংবাদিককে হত্যা

ভারতের উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদে নিজের মেয়েদের সামনেই গুলি করে হত্যা করা হল এক সাংবাদিককে। গত সোমবার রাতে দিল্লির কাছে গাজিয়াবাদের বিজয় নগর এলাকায় বাড়ি ফেরার সময় দুই মেয়ের সামনেই মাথা লক্ষ্য করে দুর্বৃত্তরা গুলি চালায় বলে অভিযোগ। বুধবার সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুর কাছে হার মানেন ওই সাংবাদিক।

সোমবার রাতের ওই ঘটনার ভিডিও ফুটেজ সামনে এসেছে। যেখানে দেখা গেছে মোটরসাইকেলে করে নিজের দুই মেয়েকে নিয়ে রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলেন স্থানীয় এক পত্রিকার সাংবাদিক বিক্রম যোশী। ঠিক সেই সময় একদল দুর্বৃত্ত তার গাড়ি থামায়। শুরু হয় মারধর। বাবার ওপর হামলা দেখে দুই মেয়েই ভয়ে সিটিয়ে যায় এবং এলাকা ছেড়ে পালাতে থাকে। এরই মধ্যে দুর্বৃত্তরা ওই সাংবাদিককে একটি গাড়ির কাছে টেনে নিয়ে গিয়ে খুব কাছ থেকে গুলি করে চম্পট দেয়। ঘটনাস্থলেই লুটিয়ে পড়েন তিনি।

ততক্ষণে এক মেয়ে বাবার কাছে ছুটে এসে সাহায্যের জন্য চিৎকার করতে থাকে। এমনকি বাবাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য পথচারীদের কাছে আর্জি জানাতে থাকে। এরই মধ্যে কয়েকজন স্থানীয় মানুষ ঘটনাস্থলে ছুটে আসে এবং আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে গাজিয়াবাদের নেহেরুনগরে যশোদা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। মঙ্গলবার তার শারীরিক অবস্থা অবনতি হওয়ায় ভেন্টিলেটারে দেওয়া হয়। যদিও শেষ পর্যন্ত হাসপাতালেই মৃত্যু হয় বিক্রমের।

সিসিটিভি ফুটেজ দেখে এখনও পর্যন্ত ৯ জন সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে। আরও এক অভিযুক্তের সন্ধানে অভিযান চলছে। কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগে সাসপেন্ড করা হয়েছে দুই পুলিশ সদস্যকেও। তাদের বিরুদ্ধে শুরু হয়েছে বিভাগীয় তদন্ত।

নিহত সাংবাদিকের পরিবারের অভিযোগ হামলার চারদিন আগে বিক্রমের ভাতিজার সাথে অশালীন আচরণের অভিযোগ ওঠে। এব্যাপারে স্থানীয় থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করে বিক্রম। কিন্তু অভিযুক্তদের কাউকেই গ্রেফতার করা হয়নি। তাই ওই ঘটনার প্রতিশোধ নিতেই অভিযুক্ত ব্যক্তিরাই সাংবাদিকের ওপর হামলা চালায় এবং তাকে হত্যা করে।

এদিকে ট্যুইট করে সাংবাদিক হত্যায় শোকপ্রকাশ করে করে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যনার্জি বলেছেন উত্তরপ্রদেশে সাংবাদিকদের কণ্ঠরোধ করা হচ্ছে।

উত্তরপ্রদেশের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী তথা বহুজন সমাজবাদী পার্টি (বসপা) নেত্রী মায়াবতীর অভিযোগ রাজ্যে আইনের শাসন নেই। এখানে অরাজকতা চলছে।

Scroll to Top