দীর্ঘ উত্তেজনার পর সবে গলওয়ান, প্যাংগংয়ের মতো বিতর্কিত এলাকা থেকে সেনা প্রত্যাহার করতে শুরু করেছে চীন। উত্তেজনা স্তিমিত হয়ে সীমান্তে শান্তি ফেরার আভাস মিলেছে। এই পরিস্থিতিতে বেইজিংকে নতুন করে চটাতে চায় না ভারত। সম্ভবত সেই কূটনীতির অংশ হিসেবেই তিব্বতের বৌদ্ধ ধর্মগুরু দলাই লামাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা পর্যন্ত জানালেন না ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও তিব্বতি ধর্মগুরুর ৮৫তম জন্মদিনের বিষয়টি এড়িয়ে গেছেন।
১৯৫৯ সালে চীনা হানাদার বাহিনীর হাত থেকে বাঁচতে তিব্বত থেকে দলবলসহ পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছিলেন দলাই লামা। এরপর থেকেই তাকে ‘বিচ্ছিন্নতাবাদী’ বলে মনে করে বেইজিং। দালাই লামা বহুবার ভারতের সাহায্য নিয়ে চীনের হাত থেকে তিব্বতকে স্বাধীন করার চেষ্টা করেছেন। সেই নেহেরুর আমল থেকেই তাকে নিয়ে ভারতের সঙ্গে চীনের কূটনৈতিক টানাপড়েন চলছে। সম্প্রতি তার ভারত ভ্রমণ নিয়েও আপত্তি তুলেছিল চীন।
কূটনৈতিক মহলের মত, এই মুহূর্তে লাদাখ সীমান্তে যখন দুই দেশের মধ্যে শান্তি প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, তখন দলাই লামাকে কাছে টানার বার্তা দিয়ে ভারত আর চীনের সঙ্গে কূটনৈতিক সংঘাতে যেতে চাইছে না।
উল্লেখ্য, সোমবার ছিল দলাই লামার জন্মদিন। প্রধানমন্ত্রী এবং রাষ্ট্রপতি শুভেচ্ছা না জানালেও লাদাখের লেফটেন্যান্ট গভর্নর আর কে মাথুর এদিন টুইট করে দালাই লামাকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। শুভেচ্ছা জানিয়েছেন অরুণাচল প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী পেমা খান্ডু, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রামবিলাস পাসওয়ান এবং কিরেন রিজিজু।
বিজেপির জাতীয় সাধারণ সম্পাদক রাম মাধবও শুভেচ্ছা জানিয়েছেন দালাই লামাকে। আসলে আপাতত চীনের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখতে দলাই লামার সখ্য এড়িয়ে চললেও তাকে বন্ধু বলেই মনে করে বিজেপি তথা আরএসএস।
ক’দিন আগে চীনের বিরুদ্ধে কূটনৈতিক পদক্ষেপ হিসেবে তাকে ‘ভারতরত্ন’ দেওয়ারও প্রস্তাব দিয়েছিল সংঘ পরিবার। ভারত সরকার অবশ্য এখন সেসব প্রস্তাবে আমল না দিয়ে বৌদ্ধ ধর্মগুরুর থেকে দূরত্ব বজায় রাখারই চেষ্টা করছে।
: সংবাদ প্রতিদিন