আর মাত্র চার মাস পরেই প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। আর দেশের একটা বড় অংশ কর্মহীন। বেকারভাতা পাওয়ার জন্য লাখ লাখ মানুষ নাম লেখাচ্ছেন। এই পরিস্থিতিতে আগামী ছয় মাসের জন্য এইচ-১ বি-সহ মোট পাঁচটি অভিবাসী ভিসা বন্ধ রাখার কথা ঘোষণা করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। উদ্দেশ্য, মার্কিন নাগরিকদের জন্য চাকরির সুযোগ করে দেওয়া।
গতকাল হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে সরকারি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, প্রেসিডেন্টের এই সিদ্ধান্তের ফলে অন্তত ৫ লাখ ২৫ হাজার মার্কিন নাগরিক চাকরির সুযোগ পাবেন। ডেমোক্র্যাট নেতাদের একাংশের বক্তব্য, নির্বাচনকে এখন পাখির চোখ করছেন প্রেসিডেন্ট। দেশের মানুষের সমর্থন আদায়ে অভিবাসীদের ভিসায় আক্রমণ। এই সিদ্ধান্তে মার্কিন অর্থনীতির অগ্রগতির পথ আরও রুদ্ধ হবে বলেই মনে করছেন কংগ্রেস সদস্যদের একাংশ।
নিজের বিশেষ প্রশাসনিক ডিক্রি প্রয়োগ করে এইচ-১ বি, এইচ-২ বি, এইচ-৪, জে এবং এল ভিসার অনুমোদন গোটা বছরের মতো বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেন ট্রাম্প। লাখ লাখ ভারতীয় তথ্যপ্রযুক্তি কর্মীর উপরে যার প্রভাব পড়তে চলেছে। মূলত এইচ-১ বি ভিসায় যারা মার্কিন মুলুকে কাজ করতে আসেন, কোপ পড়েছে তাদের সঙ্গীদের ভিসাতেও।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বিভাগকে নির্দেশও দিয়েছেন, যেসব অবৈধ অভিবাসীকে ইতোমধ্যেই তাদের দেশে ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে, তাদের সকলের কাজের অনুমতি যেন অবিলম্বে বাতিল করা হয়। তাদের মধ্যে এমন অনেকে রয়েছেন, যাদের বিরুদ্ধে আমেরিকায় ফৌজদারি মামলা রয়েছে। এর মাধ্যমেই অন্তত ৫০ হাজার মার্কিন নাগরিকের চাকরি নিশ্চিত করা যাবে বলে দাবি হোয়াইট হাউসের।
বিষয়টি নিয়ে তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাগুলি যেমন সরব হয়েছে, তেমনই মার্কিন কংগ্রেসের একাধিক সদস্যও ট্রাম্পের সমালোচনা শুরু করেছেন।
ভারতীয় বংশোদ্ভূত কংগ্রেস সদস্য রাজা কৃষ্ণমূর্তি বলেছেন, প্রেসিডেন্টের এই সিদ্ধান্তে আমি হতবাক। আমি তাকে অনুরোধ করব, এর উল্টোটা করতে। যাতে স্বাস্থ্যকর্মীরা এ দেশে কাজ করার সুযোগ পান। কোভিড-১৯ মহামারীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য এখন আরও চাকরি তৈরির প্রয়োজন।’’
কৃষ্ণমূর্তির বক্তব্য, এইচ-১ বি বাতিল করে সমস্যার সমাধান হবে না। উল্টে মার্কিন অর্থনীতি আরও মুখ থুবড়ে পড়বে। একই বক্তব্য ডেমোক্র্যাট সিনেটর ডিক ডারবিন এবং কংগ্রেস সদস্য বিল পাসরেল এবং আর এক ভারতীয় বংশোদ্ভূত কংগ্রেস সদস্য রো-খন্নার।
ট্রাম্পকে আক্রমণ করে আরও এক ধাপ এগিয়ে কংগ্রেস সদস্যা তথা ডেমোক্র্যাট নেত্রী ডনা শালালা বলেছেন, এই সিদ্ধান্ত এটাই প্রমাণ করে যে কীভাবে কোভিড-১৯-কে হাতিয়ার করে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প অভিবাসী-বিরোধী নীতি ও বিদ্বেষ আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে চাইছেন।’’
: আনন্দবাজার।