লাদাখে গালওয়ান সীমান্তে চীন-ভারতের মধ্যে সংঘর্ষে অন্তত কুড়ি জন ভারতীয় সেনা নিহত হওয়ার পরে মঙ্গলবার দুটি দেশই সিদ্ধান্ত নিয়েছে পূর্ব লাদাখ থেকে পিছু হঠবে তারা।
সেনা কমান্ডার পর্যায়ে দীর্ঘ বৈঠকের পরে চীন আর ভারত ঠিক করেছে যে পূর্ব লাদাখে যতগুলি এলাকা নিয়ে পরস্পরর মধ্যে বিরোধ রয়েছে, সেই সব এলাকা থেকে দুই বাহিনীই পিছিয়ে যাবে।
ভারতীয় সেনাবাহিনীর কোনও আনুষ্ঠানিক বক্তব্য এখনও আসেনি, কিন্তু নির্ভরযোগ্য সেনা সূত্রগুলি জানিয়েছে যে পূর্ব লাদাখে দুই বাহিনী ঠিক কীভাবে পিছিয়ে যাবে, বা কবে থেকে বাহিনী সরিয়ে নেওয়ার কাজ হবে, সেসব খুঁটিনাটি দুই বাহিনী এরপরে ঠিক করবে।
চীনের সরকারি সংবাদপত্র পিপলস ডেইলিও সেদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রকে উদ্ধৃত করে টুইট করেছে যে দুই সেনা কমান্ডারের মধ্যে এই দ্বিতীয় বৈঠকটি প্রমাণ করে যে আলাপ আলোচনার মধ্যে দিয়েই মতবিরোধ মিটিয়ে নিতে আর উত্তেজনা কমাতে চাইছে দুই দেশই।
মে মাসের গোড়া থেকে শুরু হওয়া সীমান্ত সংঘাতের মধ্যেও এই বৈঠকটি খুব সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে হয়েছে বলে জানিয়েছে ভারতীয় সেনাসূত্রগুলি। আলোচনাও গঠনমূলক হয়েছে বলে বলা হচ্ছে।
এই বৈঠকে ভারতের তরফে ফোরটিন কোরের লেফটেনান্ট জেনারেল হারিন্দার সিং ছিলেন আর চীনের দিক থেকে ছিলেন তিব্বত সামরিক জেলার কমান্ডার মেজর জেনারেল লিউ লিন। বৈঠকে ভারত আবারও বলেছে যে গালওয়ান উপত্যকায় চীন পূর্ব পরিকল্পিত হামলা চালিয়েছিল।
সেনা সূত্র থেকে বলা হয়েছে এটা নিয়ে যেমন বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে, তেমনই ভারতের প্রস্তাব মতো দুই দেশের সেনা সংখ্যা কমানো নিয়েও আলোচনা হয়েছে ওই বৈঠকে। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা নিয়ে দুই দেশের মধ্যে বহু দশক ধরেই পরস্পরবিরোধী দাবি আছে।
লাদাখ হোক বা উত্তর পূর্বের অরুণাচল প্রদেশ হোক – নিয়ন্ত্রণ রেখা যে খুবই অস্পষ্ট, সেটা সামরিক এবং কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বারে বারেই বলেছেন।
দুই দেশই মেনে নেবে, এমন কোনও মানচিত্র নেই। সেজন্যই ভারত বা চীন – যেটা দাবি করে তাদের এলাকা বলে, অন্য দেশ সেটা মানতে চায় না। বিরোধ এটা নিয়েই। কিন্তু এই মতবিরোধ সেনাবাহিনীর কমান্ডার পর্যায়ে হয়তো সমাধান হবে না।
এই আলোচনায় শীর্ষ রাজনৈতিক এবং কূটনৈতিক নেতৃত্বর মধ্যে আলোচনা করেই এটার সমাধান সম্ভব বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।
: বিবিসি বাংলা