বেপরোয়া ট্রাম্প ‘তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের’ হুমকি

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অন্য দেশগুলোকে বেপরোয়া হুমকি-ধমকির মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে ‘তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের পথে’ ঠেলে দিচ্ছেন। আর এটি করতে গিয়ে তিনি তাঁর অফিসকে ‘রিয়্যালিটি শো’র মতো ব্যবহার করছেন।

গতকাল রোববার নিউইয়র্ক টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সিনেটের পররাষ্ট্র সম্পর্কবিষয়ক কমিটির রিপাবলিকান চেয়ারম্যান সিনেটর বব করকার এ মন্তব্য করেছেন।

নিজ দলের প্রেসিডেন্টকে বিশেষ ভর্ৎসনা করে করকার বলেন, প্রেসিডেন্টকে নিয়ে তিনি উদ্বেগে আছেন। কারণ, ট্রাম্প যেন শিক্ষানবিশ বা এমন কিছুর মতো আচরণ করছেন।

করকার বলেছেন, ‘ট্রাম্প আমাকে উদ্বেগে রেখেছেন। যাঁরা আমাদের দেশের কথা ভাবেন, তাঁদের কথা তাঁর চিন্তা করা উচিত।’

গতকাল থেকে টেনেসির সিনেটর করকার ও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের মধ্যে টুইট-তর্ক শুরু হয়। পুনরায় নির্বাচন করবেন না বলে সিদ্ধান্ত নেন করকার। আর এ নিয়ে করকারকে খোঁচা দিয়ে টুইট করেন ট্রাম্প। নির্বাচনে দাঁড়াতে করকারের সাহস নেই, এ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। ট্রাম্পের টুইটের জবাব দিতে দেরি করেননি করকার। তিনি টুইট করে বলেন, ‘লজ্জার কথা। হোয়াইট হাউস বয়স্কদের ডে কেয়ার সেন্টারে পরিণত হয়েছে। আজ সকালে মনে হয় কেউ তাদের দায়িত্ব পালন করতে আসেনি।’

এদিকে ট্রাম্প বলেছেন, ‘ওই সিনেটর তাঁর সমর্থন চেয়েছিলেন। আমি তাঁকে “না” করে দেওয়ায় তিনি সরে দাঁড়ান। কারণ, আমার সমর্থন ছাড়া তিনি জিততে পারতেন না।’ ট্রাম্প আরও বলেন, ‘রাষ্ট্রের সচিব হতে চেয়েছিলেন করকার। আমি তাঁকে না করে দিয়েছিলাম।’

ট্রাম্পের এ বক্তব্য অস্বীকার করে করকার বলেছেন, ‘ট্রাম্প চেয়েছিলেন আমি আবার নির্বাচনে লড়ি। এবং এটি করলে তিনি আমাকে সমর্থন দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।’

ট্রাম্পের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে করকার বলেছেন, রাজনীতির শিক্ষানবিশ এখনো শো ব্যবসা থেকে বেরিয়ে আসতে ব্যর্থ।

টেলিফোনে ২৫ মিনিট ধরে দেওয়া ওই সাক্ষাৎকারে করকার বলেন, ট্রাম্প এতটাই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছেন যে জ্যেষ্ঠ প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের অবশ্যই ট্রাম্পের ইচ্ছাগুলোকে দমাতে হবে।

টেনেসির সিনেটর ও ট্রাম্পের মধ্যে এই তর্কযুদ্ধ সবার নজর কেড়েছে। ট্যাক্স পুনর্গঠন ও ইরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তি নিয়ে প্রভাবশালী এ সিনেটরের সমর্থন ট্রাম্পের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

ট্যাক্স পুনর্গঠন, ইরান চুক্তি ছাড়াও করকারের কমিটি ট্রাম্পের অ্যাম্বাসেডর নিয়োগের শুনানির অনুমোদন করে। বর্তমান পররাষ্ট্রমন্ত্রী টিলারসনকে বরখাস্ত করে ওই পদে অন্য কাউকে নিতে হলে এই কমিটির কাছ থেকে ট্রাম্পকে অনুমোদন নিতে হবে। টিলারসনের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত করকার। এর আগে উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে টিলারসনের আলোচনা নিয়ে ট্রাম্পের মন্তব্যের সমালোচনা করেন করকার। তাঁর ভাষ্য, টুইটার ব্যবহার করে কূটনীতিকে বারবার খাটো করছেন তিনি।

করকারের পরামর্শ হচ্ছে, ট্রাম্পকে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে ঠান্ডা রাখতে তাঁর আশপাশে থাকা লোকগুলোকে ভূমিকা রাখতে হবে। ‘আমি মনে করি, তাহলেই আমরা ভালো থাকব।’ তথ্যসূত্র: নিউইয়র্ক টাইমস।

বাংলাদেশ সময়: ১৩১৩ ঘণ্টা, ০৯ অক্টোবর ২০১৭
লেটেস্টবিডিনিউজ.কম/এসডিএম