করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর সুস্থ হয়ে ওঠা ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লির নিজামুদ্দিন মারকাজে অংশ নেয়া তাবলিগ জামাতের শত শত সদস্যরা মানবিকতার অনন্য নজির গড়লেন। দেশটির বিভিন্ন প্রান্তের তাবলিগ জামাতের কয়েকশকর্মী সুস্থ হয়ে ওঠার পর গুরুতর অসুস্থ রোগীদের রক্তের প্ল্যাজমা দান করেছেন। তাবলিগ জামাতের সদস্যদের দেয়া প্ল্যাজমায় সুস্থ হয়ে ওঠার স্বপ্ন দেখছেন করোনায় গুরুতর অসুস্থ শত শত রোগী।
ইতোমধ্যে দেশটির রাজধানী নয়াদিল্লি, গুজরাট, হরিয়ানা এবং অন্যান্য প্রদেশে তাবলিগের স্বেচ্ছাসেবীরা প্ল্যাজমা দান করেছেন। এছাড়া যেসব রাজ্য এখনও প্ল্যাজমা চিকিৎসা পদ্ধতির অনুমতি দেয়নি; সেসব রাজ্যেও তাবলিগ জামাতের অনেক সদস্য প্ল্যাজমা দান করার জন্য অঙ্গীকার করেছেন। কর্তৃপক্ষের অনুমতি মিললেই তারা প্ল্যাজমা দেবেন বলে জানিয়েছেন।
দিল্লির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা চিকিৎসক মোহাম্মদ শোয়েব আলী করোনা থেকে সুস্থ হয়ে ওঠা ব্যক্তিদের শরীর থেকে রক্তের প্ল্যাজমা সংগ্রহের কাজ সমন্বয় করছেন। তিনি বলেন, দিল্লিতে তাবলিগ জামাতের দুই শতাধিক সদস্য প্ল্যাজমা দানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন; তবে এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। ইতোমধ্যে রোববার তাবলিগের ১০ সদস্য ইফতারির পর এসে প্ল্যাজমা দিয়ে গেছেন।
দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল একদিন আগেই সুস্থ হয়ে ওঠা ব্যক্তিদেরকে গুরুতর অসুস্থ করোনা রোগীদের বাঁচাতে প্ল্যাজমা দান করার আহ্বান জানিয়েছিলেন। তার এই আহ্বানের পরপরই তাবলিগ জামাতের কয়েকশ সদস্য প্ল্যাজমা দানে এগিয়ে আসেন।
ভারতে তাবলিগ জামাতের প্রধান মাওলানা মুহাম্মদ সাদ তার অনুসারী যারা করোনা থেকে সুস্থ হয়ে উঠেছেন; তাদের সবাইকে প্ল্যাজমা দানে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন।
দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় তামিলনাড়ুতে করোনা রোগীদের চিকিৎসায় এখনও প্ল্যাজমা সংগ্রহের অনুমতি দেয়নি কেন্দ্রীয় সরকার। কিন্তু এই রাজ্যে তাবলিগের সাড়ে চার শতাধিক সদস্য প্ল্যাজমা দানের জন্য ইতোমধ্যে নিবন্ধন করেছেন।
অল ইন্ডিয়া মুসলিম পারসোনাল ল বোর্ডের নির্বাহী সদস্য ও চেন্নাইয়ের বাসিন্দা মাওলানা শামস উদ্দিন কাসিমি বলেন, আমরা তামিলনাড়ুতে প্ল্যাজমা তারতিব জামাত নামে একটি গ্রুপ তৈরি করেছি। এই গ্রুপ তাবলিগ জামাতের সাড়ে চারশ\’র বেশি সদস্যদের নাম তালিকাভূক্ত করেছে; যারা প্ল্যাজমা দানে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
উল্লেখ্য, গত মাসের শেষের দিকে দিল্লির নিজামুদ্দিন মারকাজ মসজিদে তাবলিগ জামাতের সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এই সমাবেশে তাবলিগ জামাতের অংশগ্রহণকারী কয়েক হাজার সদস্য করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন। এ নিয়ে দেশটির বিভিন্ন রাজনৈতিক দল তাবলিগ জামাতের নেতাদের তীব্র সমালোচনা করে।