বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের প্রকোপ থেকে বাঁচার উপায় হলো সামাজিক দূরত্ব মেনে চলা। ঘরে অবস্থান করা। একান্ত প্রয়োজনে বাইরে বের হলে মাস্ক ব্যবহার করা। করোনা প্রতিরোধে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এসব বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। তবে এসব বিধি-নিষেধের একটি অমান্য করায় নিজের ছেলেকে খুন করল বাবা। লকডাউনের মধ্যেই গতকাল শনিবার এ ঘটনা ঘটল ভারতের উত্তর কলকাতায়।
জানা গেছে, শনিবার সন্ধ্যা ৭টায় স্থানীয় শ্যামপুকুর থানায় ডিউটি অফিসারের সামনে হঠাৎ হাজির এক বৃদ্ধ। নিজেকে বংশীধর মল্লিক পরিচয় দিয়ে ওই বৃদ্ধ জানান, ছেলেকে খুন করে এসেছি! আত্মসমর্পণ করতে চাই। অফিসার হতভম্ব। পরে সব শুনে বংশীধরের বাড়িতে গিয়ে উদ্ধার করা হয় তার ছেলে শীর্ষেন্দুর (৪৫) মরদেহ।
পুলিশ জানিয়েছে, উত্তর কলকাতার শোভাবাজার লেনের বাসিন্দা ওই বৃদ্ধ জানান- বার বার বলা সত্বেও মাস্ক না পড়ে বাড়ির বাইরে বেরিয়েছিল ছেলে শীর্ষেন্দু। তা থেকে বিতর্কের জেরেই ছেলেকে খুন করেছেন তিনি।ছেলে শারীরিক প্রতিবন্ধী এবং মৃগী রোগী। এদিনও তিনি বেরোনোর সময়ে ছেলেকে মাস্ক পরতে বলেন। কিন্তু ছেলে কিছুতেই তা পরতে রাজি হননি। বারবার বলেও রাজি না হওয়ায় তিনি ছেলের গলায় কাপড় পেঁচিয়ে খুন করেছেন বলে দাবি করেন বৃদ্ধ। বংশীধরের কাছ থেকে ওই বর্ণনা শুনেই আর দেরি করেননি শ্যামপুকুর থানার অফিসারেরা।
ঘটনাস্থলে গিয়ে তারা দেখেন, ঘরের মাটিতে পড়ে রয়েছে শীর্ষেন্দুর মরদেহ আর বিছানায় শুয়ে রয়েছেন এক বৃদ্ধা। তিনি শীর্ষেন্দুর মা। সেরিব্রাল অ্যাটাকের পর পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে ১৮ বছর ধরে বিছানায় শয্যাশায়ী তিনি। মায়ের সামনেই ছেলেকে বংশীধর খুন করেন বলে পুলিশ জানিয়েছে। এর পরই পুলিশ শীর্ষেন্দুর মরদেহ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয় ময়নাতদন্তের জন্য।
এদিকে জানা গেছে, অবসরপ্রাপ্ত ওই সরকারি কর্মী আর্থিক অনটনে ভুগছিলেন। দীর্ঘদিন অসুস্থ হয়ে শয্যাশায়ী তাঁর স্ত্রী। সেসব থেকেই ছেলেকে খুন করেছেন কি না তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।