চীনে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রায় ৫০ হাজার মানুষ মারা গেছে। দেশটি মৃত ও আক্রান্ত লোকজনের বিষয়ে প্রকৃত তথ্য দেয়নি। আজ শনিবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী পত্রিকা ‘ওয়াশিংটন পোস্ট’–এর প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়।
তবে চীন সরকার বলছে, এখন পর্যন্ত তাদের মূল ভূখণ্ডে ৮২ হাজার লোক আক্রান্ত হয়েছেন। আর মারা গেছেন তিন হাজার ৩০০ লোক। অথচ যুক্তরাষ্ট্রে ২ লাখ ৭৭ হাজার লোক আক্রান্ত ও সাত হাজারের মৃত্যু হয়েছে।
চীনের সাময়িকী ‘ক্যাক্সিন’–এর তথ্য উদ্ধৃত করে প্রতিবেদনে বলা হয়, উহানের হানকাউ নামের একটি শ্মশানে প্রতিদিন ১৯ ঘণ্টা ধরে মৃতদেহ সৎকার হয়েছে। মাত্র দুদিনে সেখানে ৫ হাজার মানুষের মরদেহ পোড়ানো হয়। অনলাইনে পোস্ট করা ছবি ব্যবহার করে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলো একটা হিসাব বের করেছে। এ হিসাবে গত ২৩ মার্চ থেকে মৃতদেহ সৎকার শেষে উহানে শব বা মৃতদেহের ছাই ভরা ৩ হাজার ৫০০ কলস ফিরে এসেছে প্রতিদিন। এই হিসাবে ‘ওয়াশিংটন পোস্ট’–এর প্রতিবেদনে ৩ এপ্রিল পর্যন্ত ১২ দিনে উহানে ৪২ হাজার মানুষের মৃত্যুর তথ্য উঠে এসেছে।
রেডিও ফ্রি এশিয়ার বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, উহানে ৮৮টি চুল্লিতে দিন–রাত মৃতদেহ পোড়ানো হয়। সেখানে ৪৮ হাজার ৮০০ মানুষকে পোড়ানো হয়েছে।
এর আগে হোয়াইট হাউসে পাঠানো এক গোপন প্রতিবেদনে মার্কিন গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃত্যু নিয়ে চীনের সরকারি প্রতিবেদন ইচ্ছাকৃতভাবে অসম্পূর্ণ রাখা হয়েছে। প্রতিবেদনটি অতিগোপনীয় বলে নাম প্রকাশ করতে চাননি কর্মকর্তারা। এ নিয়ে তারা বিস্তারিত তথ্য দিতেও অস্বীকৃতি জানিয়েছেন।
ইতিমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থাও জানিয়েছে, চীন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃত মানুষের তথ্য গোপন করছে। প্রকৃত অবস্থা আরও ভয়াবহ।
চীনে করোনাভাইারাসে আক্রান্ত ও মৃতের সরকারি সংখ্যা নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও সন্দেহ প্রকাশ করেছেন ।
গত বুধবার ওয়াশিংটনে এক সংবাদ সমেল্লনে ট্রাম্প বলেন, চীনের পরিসংখ্যানে করোনায় আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা আমার মনে হয় কম করে দেখানো হয়েছে।
মার্কিন আইন প্রণেতা ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যদের পক্ষ থেকে বেইজিংয়ের বিরুদ্ধে এই প্রাদুর্ভাবের প্রতিবেদনটি ইচ্ছাকৃতভাবে তৈরি করা হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
জনস হপকিনস ইউনিভার্সিটির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, চীনে সর্বশেষ আজ শনিবার পর্যন্ত ৮২ হাজার ৫২৬ জন আক্রান্ত হয়েছে। এর মধ্যে মারা গেছে ৩ হাজার ৩৩০ জন। আর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে ৭৬ হাজার ৯৩৪ জন।